Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগকর্মীদের পেটাল, ছাদ থেকে ফেলল ‘কোটাবিরোধীরা’

চট্টগ্রামের মুরাদপুরের এই ভবনটির ছাদ থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। ছবি : ভিডিও থেকে
চট্টগ্রামের মুরাদপুরের এই ভবনটির ছাদ থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। ছবি : ভিডিও থেকে
[publishpress_authors_box]

সারাদেশে যখন কোটাবিরোধীদের ওপর হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করা হচ্ছে, তখন চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের হাতে সরকার সমর্থক এই সংগঠনটির কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার বিকালে বন্দর নগরীর মুরাদপুর এলাকার বেলাল মসজিদের পাশের মীর মঞ্জিল নামে একটি ভবনে ছাত্রলীগকর্মীদের মারধর এবং ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে, যার ভিডিও দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ নূরুল আজিম রনি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো যে, এই আন্দোলন এখন আর কোটাবিরোধী আন্দোলন নেই। এটি জামায়াত-শিবিরের আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে।”

মুরাদপুরের ঘটনায় ৩৪ ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান রনি। এদের মধ্যে ৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এছাড়া সাতজন ক্যাজুয়ালটি বিভাগে, পাঁচজনকে ভর্তি করা হয়েছে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে। এদের অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান এই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

এই বিষয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারও বক্তব্য সকাল সন্ধ্যা জানতে পারেনি।

মীর মঞ্জিলের ঘটনার আগে মুরাদপুরের কাছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে এক ছাত্রদল নেতাসহ তিনজন নিহত হন। নিহত ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম সংগঠনের চট্টগ্রাম কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

মুরাদপুরে সংঘর্ষের পর অলি-গলিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছিল। তখনই মীর মঞ্জিলে ছাত্রলীগকর্মীরা আ্ক্রান্ত হন। ওই ভবনের ছাদে বিকাল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আশপাশের ভবনগুলো থেকে এসব ঘটনার ভিডিওধারণ করা হয়। কয়েকটি ভিডিও এসেছে সকাল সন্ধ্যার হাতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মীর মঞ্জিলের ছাদে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ওই ভবনটি ঘিরে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। লাটিসোঁটাসহ কিরিচের মতো ধারাল অস্ত্র নিয়ে তারা তালা ভেঙে ভবনটির ছাদে উঠে যান। সেখানে অবস্থান করা ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের আঘাত করতে থাকেন।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের হাত থেকে বাঁচতে অনেকে জানালার ওপরে কার্নিশে উঠে আশ্রয় নেন। অনেককেই ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। আবার যারা কার্নিস থেকে ঝুলে ছিলেন, তাদের ক্রমাগত পাথর মারা হচ্ছিল।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোটাবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা জানালার পাশে ঝুলে থাকা এক ছাত্রলীগ কর্মীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। ভবনের পেছনে খালিস্থানে অন্তত পাঁচজন ছাত্রলীগ কর্মী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। তাদেরও পেটানো হচ্ছিল। এক পর্যায়ে পড়ে থাকা একজনের কাছে গিয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হয় যে তিনি বেঁচে আছেন কি না?

ভবন থেকে পড়ে যাওয়া আহত ছাত্রলীগকর্মীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ নাকচ করে সংগঠনটির সাবেক নেতা রনি বলেন, “বাইরে থেকে অস্ত্রধারী এনে আমাদের নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

“কোটা আন্দোলনের ‘মেধাবী’ কর্মীরা কীভাবে এতটা নৃশংস হতে পারে, তা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না।

বাস্তবে এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে একটি দল পানি ঘোলা করে সুবিধা নিয়েছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত