একটানা ছয় মেয়াদে ১৫ বছর চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব পালনের পর সরানো হলো চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহকে।
বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পাস-২ শাখার উপসচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে ফজলুল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের পাশাপাশি তাকে অপসারণের কথা জানানো হয়। তবে বিষয়টি প্রকাশ পায় বৃহস্পতিবার।
একই প্রজ্ঞাপনে ওয়াসার দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে সাময়িকভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির
গত ১৫ বছর দায়িত্ব পালনকালে ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হলেও কোনোটিই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি।
পাশাপাশি পানি চুরি, বছর বছর দাম বাড়ানো, অপচয় কমাতে না পারা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বারবার সমালোচিত হন ৮২ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী।
ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসার কাঠামোগত পরিবর্তন এলে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে নিয়োগ পান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে এমডি পদে বারবারই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে রদবদল হয়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা ওয়াসাতেও নতুন এমডি নিয়োগ দেয় সরকার। তবে সরানো হচ্ছিল না ফজলুল্লাহকে।
তার পদত্যাগের দাবিতে বেশ কয়েকটি সংগঠন দফায় দফায় আন্দোলন করলেও তিনি সরেননি।
শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তার চুক্তি বাতিল করে অপসারণ করল।