ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তিনি বলেছেন, “সোশাল মিডিয়া এখন বিপদের কারবার। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াও এখন ফেইসবুকে চলে আসে। সোশাল মিডিয়া নিয়ে কিছু বললে আবার রাইটস টু ফ্রিডম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।”
বিএনপির ছয় আইনজীবীর আদালত অবমাননার মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার একথা বলেন বিচারাঙ্গনের প্রধান।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে সরকার দুই সপ্তাহ বন্ধ রেখেছিল ফেইসবুকসহ কয়েকটি সোশাল মিডিয়া।
তথ্য প্রযৃুুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যুক্তি দেখিয়েছেন, উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে সহিংসতার ছড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধে সরকার ওই পদক্ষেপ নিয়েছিল।
বুধবার ফেইসবুকসহ সোশাল মিডিয়াগুলো খুলে দেওয়ার একদিন বাদেই এই মাধ্যমগুলো নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য এল।
আদালতে বিএনপির ছয় আইনজীবীর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন এবং বর্তমান সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
পরে আপিল বিভাগ দুই সপ্তাহের জন্য শুনানি মূলতবি করে দেন।
আপিল বিভাগের দুই বিচারকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল-সমাবেশ করার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল।
সাত আইনজীবী হলেন– জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী (তিনি বর্তমানে মৃত), জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল। এরমধ্যে এ জে মোহাম্মদ আলী মারা যাওয়ায় এখন ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল বহাল থাকে।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগের দুই বিচারকের বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ করায় তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল এই আইনজীবীদের।
গত ১৫ আগস্টের শোক দিবসের আলোচনা সভায় ‘বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেওয়ায় আপিল বিভাগের দুই বিচারকের বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পদত্যাগের দাবি করে আসছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। এছাড়া ওই দুজন বিচারকের বিচারকাজ থেকে বিরত রাখতে কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা।
শোক দিবসের আলোচনা সভায় ‘বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দিেয়ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আর বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, “সারাবিশ্বে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখে না, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন?”
এই দুই বিচারকের বক্তব্যে শপথ ভঙ্গ হয়েছে দাবি করে তাদের পদত্যাগ দাবি করে বিএনপির আইনজীবী।
এরপর বিএনপির আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাজমুল হুদা নামে একজন আইনজীবী। সেই আবেদনে আদালত অবমাননার অভিযোগ আমলে নিয়ে নোটিস জারি করে আপিল বিভাগ।