Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনে বদলে যেতে পারে সময়ের হিসাব : গবেষণা

২০২৬ সালে আমাদের ঘড়ি থেকে এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তবে তা পিছিয়ে ২০২৯ সালে চলে যেতে পারে।
২০২৬ সালে আমাদের ঘড়ি থেকে এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তবে তা পিছিয়ে ২০২৯ সালে চলে যেতে পারে।
[publishpress_authors_box]

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনেক বিস্তৃত। এর প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘূর্ণনের গতিতেও। এ কারণে সময়ের হিসাবেও কিছুটা হেরফের হতে পারে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়।

বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকা থেকে প্রচুর পরিমাণে বরফ গলে গিয়ে সমুদ্রে যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত পানি। এতে করে পুনর্বণ্টন হচ্ছে পৃথিবীর ভর। ভরের এই পুনর্বণ্টন কমিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর ঘূর্ণন, যদিও তা খুব সামান্য মাত্রায়।

নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এরই মধ্যে আমাদের সময়ের হিসাবকে প্রভাবিত করেছে।”

বিশ্বের বেশিরভাগ ঘড়ি এবং সময়ের হিসাব করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় সমন্বিত বৈশ্বিক সময় (ইউটিসি)। পৃথিবীর ঘূর্ণনের উপর ভিত্তি করে এই সময় হিসাব করা হয়।

পৃথিবীর ঘূর্ণনের হার সবসময় একই রকম থাকে না। এতে আমাদের দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের উপরও প্রভাব পড়ে। বর্তমানে পৃথিবীর তরল কেন্দ্রে পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী কিছুটা দ্রুত ঘুরছে।

পৃথিবীর গতি বাড়ায় ২০২৬ সালে বিশ্বের ঘড়ি থেকে এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এভাবে বেশি বেশি বরফ গলে যাওয়ায় হয়তো তা আরও কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে।

১৯৭০ এর দশক থেকে সময়ের হিসাব সংশোধনের জন্য বিশ্ব ঘড়িতে প্রায় ২৭ লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি বাড়ায় ২০২৬ সালে প্রথমবারের মতো ঘড়ি থেকে একটি সেকেন্ড বিয়োগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একে বলা হচ্ছে ‘নেগেটিভ লিপ সেকেন্ড’।

গবেষণায় বলা হয়েছে, বরফের চাইগুলো এখন ৩০ বছর আগের তুলনায় পাঁচগুণ দ্রুতগতিতে গলছে। জলবায়ু পরিবর্তনই এর কারণ। এতে বরফ গলে যাওয়ায় কিছুটা কমেছে পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি। এর ফলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত নেগেটিভ লিপ সেকেন্ড প্রয়োজন হবে না।

এর আগে কখনও নেগেটিভ লিপ সেকেন্ড ব্যবহার করা হয়নি। গবেষণা বলছে, এটির ব্যবহার সারা বিশ্বে কম্পিউটার সিস্টেমের জন্য একটি অভূতপূর্ব সমস্যা সৃষ্টি করবে।

গবেষণার লেখক ডানকান অ্যাগনিউ এনবিসি নিউজকে বলেন, “নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটছে। আমরা এমন কিছু করেছি যা পৃথিবী কত দ্রুত ঘোরে তাও পরিবর্তন করে ফেলে।”

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান দিয়েগোর গবেষক অ্যাগনিউ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “এমনটা আগে কখনও ঘটেনি। বিশ্বব্যাপী সময় পরিকাঠামোর সবগুলো অংশে একই সময় দেখানোর বিষয়টি নিশ্চিত করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।”

তিনি বলেন, “নেগেটিভ লিপ সেকেন্ডের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামগুলোকে নতুন করে লিখতে হবে। কারণ এখন শুধু পজিটিভ লিপ সেকেন্ডের ধারণাই আছে।”

তবে এ গবেষণা নিয়েও কিছুটা সংশয় আছে। কারণ পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি সবসময় বাড়া-কমার মধ্যেই থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল অবজারভেটরির টাইম সার্ভিসের প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী ডেমেট্রিওস মাতসাকিস এএফপিকে বলেন, “পৃথিবীর সম্পর্কে কোনও নিশ্চিত অনুমান করা কঠিন। শিগগিরই আমাদের নেগেটিভ লিপ সেকেন্ডের প্রয়োজন হবে কিনা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত