জলবায়ু পরিবর্তনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলে মনে করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলো অনেকাংশে দায়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কমিউনিটি বেইজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ রিস্ক অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট’ (সিআরভিএ) শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য রাখছিলেন ফরিদা আখতার।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশে প্রায়ই আকস্মিক বন্যা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে না। বরং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ক্রস কান্ট্রি ও ক্রস বাউন্ডারি আলোচনা দরকার।”
এসময় ‘জেন্ডার বাজেটের’ ওপর গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা ফরিদা। তিনি বলেন, “জেন্ডার বৈষম্যের সমস্যাগুলো মোকাবেলা করে জেন্ডার শ্রেণিবিন্যাস এবং নারী ও পুরুষদের মধ্যে অসঙ্গতি দূর করতে জেন্ডার বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জলাবদ্ধতার জন্য অপরিকল্পিত রাস্তা ও উন্নয়নকে দায়ী করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে ফসলের ক্ষতি নিয়ে বেশি আলোচনা হলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সম্পর্কে খুব কম আলোচনা হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।”
জলবায়ু পরিবর্তনে নারী-পুরুষ উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নারীদের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনে আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়।”
এসময় ‘কমিউনিটি বেইজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের মাধ্যমে আরও বেশি জনগণকে, বিশেষ করে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান উপদেষ্টা ফরিদা।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইজিআইএসের প্রজেক্ট এক্সপার্ট মোহাম্মদ মুকতারেজ্জামান ও এফএও এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. মো. আবুল হাসনাত।
কর্মশালায় বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে টেকসই মৎস্য চাষ উন্নয়ন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, যেখানে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চল ও মৎস্য খাত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন।