Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

বিশ্বকে বাঁচাতে তরুণদের ‘জলবায়ু ধর্মঘট’

ss-climate strike-19-4-24
[publishpress_authors_box]

বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করেছে দেশের তরুণ জলবায়ু যোদ্ধারা। জলবায়ু সুরক্ষা ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ, নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণ ও টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বিশ্বে চলমান গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে যোগ দিয়েছে দেশের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা।

শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একশনএইড বাংলাদেশের যুব প্ল্যাটফর্ম এক্টিভিস্টা বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই সমাবেশ করা হয়। সেখানেই দেশ ও বৈশ্বিক বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থা, ব্যাংক এবং বেসরকারি সেক্টরের কাছে এই আহ্বান জানানো হয়।

গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর ও ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধে বিশ্বনেতাদের কাছে দাবি জানানো হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশ শেষে শোভাযাত্রা করে শিক্ষা ভবন প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে সমবেত হয় জলবায়ু যোদ্ধারা। সেখানে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন কার্যক্রমের সমাপ্তি টানা হয়।

জলবায়ু সংকট নিরসন, এই বিষয়ে ন্যায়বিচার দাবি ও জনগণকে সচেতন করতে একশনএইড বাংলাদেশ ও এক্টিভিস্টা বাংলাদেশসহ ২০টি সংগঠনের পাঁচ শতাধিক তরুণ জলবায়ু কর্মী এই স্ট্রাইকে অংশ নেন। একইসময় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, ভোলা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারি, কুষ্টিয়া, নেত্রকোনা, বরিশাল, টেকনাফ এবং বরগুনাসহ ২১টি জেলায় এবং বেশ কিছু লোকাল ইয়ুথ হাবের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরাও গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।

প্রাণবন্ত ও শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা স্লোগান, প্ল্যাকার্ড, চিত্রকর্ম, গান, নাটক এবং পোস্টার প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানান। এসময় এখনই জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে বলে ‘ফিক্স দ্য ফাইন্যান্স’, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করো’, ‘ক্ষতিকারক কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ বন্ধ করো’, ‘ক্লাইমেট জাস্টিস নাউ’ এবং ‘জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ করুন’ ইত্যাদি লেখা ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন স্ট্রাইকে যোগ দেওয়া জলবায়ু আন্দোলনকারীরা।

তরুণ জলবায়ু কর্মী ফাহিদা সুলতানা বলেন, “আজ আমরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ বৃদ্ধির দাবিতে লড়াই করছি। বিত্তবানদের মুনাফা ক্ষুধার মানসিকতা আমাদের ব্যথিত করছে। লোভী এই স্বার্থের জন্য আমাদের ভবিষ্যত সংকটে ফেলতে পারি না। তাই আমরা টেকসই ও নিরাপদ পৃথিবীর দাবিতে একত্র হয়েছি।”

এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে একশনএইড বাংলাদেশের ইয়াং পিপল টিম লিড মো: নাজমুল আহসান বলেন, “এখন কথা বলার সময় নয়, শুধু কর্মের সময়। আমরা এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি যেখানে কোন লোভ এই পৃথিবী ও তার মানুষদের মঙ্গলকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না।” এসময় জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিতে উত্তরের দেশগুলোর কাছে দায়বদ্ধতা নিয়ে টেকসই সবুজ বিশ্ব রূপান্তরে প্রযুক্তি ও রিসোর্স বিনিময় করার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে ফিলিস্তিনে চলমান অমানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়।

নোয়াখালীতে জলবায়ু ধর্মঘট

এই ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুক্রবার সকালে এসব সংগঠনের শতাধিক তরুণ তরুণী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করে।

এ সময় তরুণ তরুণীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনে জলবায়ু সংকট নিরসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনে যে অমানবিক যুদ্ধ চলছে তা বন্ধ করার আহ্বান জানান তারা।

জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ক্ষতিকারক কৃষি, ব্যবসায় করা বিনিয়োগগুলোকে টেকসই প্রকল্প, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং এগ্রো ইকোলজির দিকে পুনঃনির্দেশিত করার জন্য সরকারি বিনিয়োগ ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলির কাছে দাবিও আসে আন্দোলন থেকে।

পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণকারী পশ্চিমা বিশ্ব এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে অবিলম্বে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত