Beta
বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

আপনি কি কর্মক্ষেত্রে ক্লিকবাজির অংশ

Explaining plan
[publishpress_authors_box]

সারাদিনের বড় সময় কেটে যায় কর্মক্ষেত্রেই। তাই তো কাজের জায়গা অনেকের কাছে  ‘সেকেন্ড হোম’ মানে আরেকটি ঘর হয়ে ওঠে। আবেগ তাড়িত অনেকের কাছে প্রতিষ্ঠানও পরিবার হয়ে ওঠে।

কর্মক্ষেত্রেও তাই পছন্দের সহকর্মী থাকে; যিনি বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠেন।

দেখা যায়, কথায় মিল হচ্ছে এমন দুয়েকজন অথবা তিন-চারজন সহকর্মীর মাঝে খুবই সদ্ভাব। তারা দুপুরের খাবার ভাগ করে নিচ্ছেন; কাজের ফাঁকে এক সঙ্গে কফি বিরতি নিচ্ছেন। যেদিন চাপ কম সেদিন সিঁড়ি অথবা নিচে নেমে অফিস পাড়ার গলির মোড়ে টুকটাক খেতে খেতে চুটিয়ে গল্প করছেন।

কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের কয়েকজন সহকর্মীদের মাঝে এভাবে বিশেষ তালমিল জমে ওঠাকে ইংরেজিতে ক্লিক (সি-এল-আই-কিউ-ইউ-ই) বলে।

সহকর্মীদের মধ্যে একদল যখন নিজেরা জমিয়ে ফেলেছেন, অন্যরা তখন ওই দলে বারবার ভিড়তে চেয়েও সুবিধা করতে পারছেন না।

কর্মক্ষেত্রে এমন চালচিত্রের এই আলাপ নিশ্চয়ই চেনা চেনা লাগছে?   

একসময় ক্লিনিকাল মনোবিদ অধ্যাপক মাইকেল ডব্লিউ ওয়াইডারম্যান এখন ফলিত মনোবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করছেন পুরোদমে। তিনি সাইকোলজি টুডে ব্লগে লিখেছেন কর্মক্ষেত্রের এই মনস্তত্ত্ব নিয়ে।

আপনি এবং আপনার সহকর্মীর বোঝাপোড়ার মধ্যে আরেকজন যে অনাহুত এমন আভাস আপনাদের কারও আচরণেই হয়তো প্রকাশ পায় না। কিন্তু আপনাদের ছোট ছোট উচ্ছ্বাস থেকেই বাকিরা বড় কিছু বুঝে নেয়। যেমন ধরা যাক, পছন্দের সহকর্মীকে দেখে মুখের হাসি একটু বেশিই ছড়িয়ে যায় আপনার; গলার স্বরে জোর একটু যেন বেড়ে যায়।

অফিসে যারা যারা একে অন্যের সঙ্গে ক্লিক হয়ে থাকেন, তাদের হয়তো নিজেদের মধ্যে হাসির কোনো চুটকি থাকে, যা অন্য সহকর্মীও বুঝে উঠতে পারে না।    

দিনের সাত-আট ঘণ্টা যে প্রতিষ্ঠানে কাটাতে হচ্ছে সেখানে সহকর্মীদের মধ্যে থেকে বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষি পাওয়ার উপকারিতাও আছে। এতে কাজের জায়গা একঘেয়ে না হয়ে স্বস্তির হয়; অফিসের কাজে আটকে গেলে কিংবা সামাজিক ভাবে বিপদে পড়লেও সহায়তা পাওয়ার সুযোগ থাকে।

এই যে ক্লিক জমে ওঠা, এর আর কী বিনিময় মূল্য হতে পারে?

যারা কর্মক্ষেত্রে ক্লিক করছেন, তারা চট করে এর চড়া মূল্য উপলব্ধি নাও করতে পারেন; কিন্তু অন্যদিকে বাতাসে অনেক গল্প ডালপালা মেলতেই পারে। কারণ মানুষের গল্প বানানোর দারুণ ক্ষমতা রয়েছে। আর সমস্যার শুরু এখানেই।  

সহকর্মীদের মধ্যে আপনার ক্লিকে জুড়ে যেতে পারেনি এমন কেউ হয়তো আপনাদের ছোট মনের মনে করতে পারে। অথবা ক্লিকে থাকা আপনাদের অহংকারিও ভাবা হতে পারেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ধারণা আরও গভীর হয় আপনাদের অজান্তেই।  

এই যেমন, কর্মক্ষেত্রে কয়েকজন পাশাপাশি বা সামনাসামনি বসে কাজ করছেন। এরমধ্যে এমন কোনো কারণে আপনি ও আপনার ক্লিকে থাকা সহকর্মী মিলে হেসে উঠলেন জোরে; আপনাদের আশেপাশে থাকা সহকর্মীর মনে হবে এই হাসি বুঝি তাকে নিয়েই।  

আপনাদের ক্লিকের বাইরে থাকা সহকর্মীরা নিজেকে অবাঞ্ছিত মনে করবে। হয়তো বাকি সহকর্মীরা ভেবে বসবে, তাদের ততটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দেখা যাবে কাজের ক্ষেত্রে এসবের প্রভাব পড়ছে; দলের বাইরে থাকা সহকর্মীদের সঙ্গে কাজের বেলায় তেমন ভরসা দেখা যাচ্ছে না।

ক্লিকের বাইরে থাকা সহকর্মীর সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনার উপায় কী তাহলে?

সামাজিক জীবনেও এমন ক্লিক থাকার অভিজ্ঞতা হয়। তাই ভালো-মন্দ সবদিক মিলিয়েই স্বীকার করে নিতে হবে যা হয়েছে বা হচ্ছে।

যদি কেউ নিজেকে ক্লিকের একজন নয় বলে মনে করে এবং ক্লিকের সহকর্মীরা আশেপাশে থাকলে যদি কেউ ব্রিবতবোধ করে, তাহলে এই বিষয়ে সবাইকে না জানিয়ে বরং দুয়েকজনের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করে নেওয়া যায়। এতে করে মাঝের ওই ব্যক্তি হয়তো ক্লিকের সহকর্মীদের বিষয়টি জানিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে পারে। এতে করে নতুন যারা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিচ্ছেন, তারা অন্তত খেই হারিয়ে ফেলবেন না।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত