জেন-জিকে টানতে নতুন স্বাদের ‘স্পাইসড’ ব্যর্থ হয়েছে বলে এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে পানীয় কম্পানি কোকা-কোলা।
এক বিবৃতিতে কোকা-কোলার মুখপাত্র বলেন, “আমরা সবসময় আমাদের গ্রাহকদের পছন্দকে গুরুত্ব দিই। কোনটি তারা পছন্দ করছে আর কোনটি করছেনা সেসব মাথায় রাখি। ২০২৫ সালে একেবারে নতুন স্বাদের এক কোক আমরা বাজারে নিয়ে আসবো, আর সে কৌশলের অংশ হিসেবেই বাজার থেকে আমরা ‘কোকা-কোলা স্পাইসড’ তুলে নিচ্ছি।”
‘স্পাইসড’ ফ্লেভারটি জাঁকজমক বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাজারে নিয়ে আসে কোকা-কোলা, যাতে তার চিরচেনা স্বাদের সঙ্গে রাসবেরি ফ্লেভারের মিশেল ছিল।
তরুণদের ‘পাঞ্চিং টেস্ট’ (যেমন- আদার স্বাদ) এবং উষ্ণ স্বাদের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা বিবেচনা করেই কোকা-কোলা এই ফ্লেভারটি বাজারে নিয়ে আসে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই কোকা-কোলা তাদের লিমিটেড অফারের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরিবর্তন নিয়ে আসছিল। তার একটি ছিল অরিও ফ্লেভার সোডা। কাছাকাছি স্বাদের তবে ভিন্ন ভিন্ন ফ্লেভারের কিছু নামও তারা নিয়ে আসে, যেমন- ড্রিমওয়ার্ল্ড, স্টারলাইট এবং বাইট। এমনকি ডিজে মার্শমেলোকে অংশীদার করে তার নামেই একটি ফ্লেভার তারা বাজারে নিয়ে আসে।
কিন্তু কোকা-কোলা ‘স্পাইসড’ ফ্লেভারটিকে ঠিক লিমিটেড অফারে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়নি। এটিকে তারা কোকের একটি স্থায়ী সংযোজন হিসেবেই বাজারে এনেছিল।
কারণ এক গবেষণায় তারা দেখেছিল, কোমল পানীয়র গ্রাহকদের মধ্যে নাকি মশলাদার স্বাদের পানীয়ের কদর বেড়েছে। অন্যদিকে ২০২২ সালে কোকের ফ্রি স্টাইল ড্রিঙ্ক মেশিনে গ্রাহকরা ৫ মিলিয়ন বার রাসবেরি ফ্লেভার নির্বাচন করেছিল। এটা এমন এক মেশিন, যেখানে ভোক্তারা নিজের খুশি মতো ফ্লেভার বানাতে পারে। আর সে কথা বিবেচনা করেই এই ফ্লেভারটি বাজারে ছাড়ে কোকা-কোলা।
পরে অবস্থা বিবেচনায় কোক জানায় ভোক্তারা আসলে এর চেয়েও ভিন্ন কিছু চাইছে। কোকা-কোলার উত্তর আমেরিকার মার্কেটিং বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সু লিন চা জানান, “খাবারে এমনকি পানীয়তেও এই ট্রেন্ড চালু হতে আমরা দেখেছি। ভেবেছিলাম বাজারে নতুন কিছু নিয়ে আসতে পারবো।”
এর আগে কোকা-কোলা ২০২০ সালে বাজারে নিয়ে আসা চেরি ভ্যানিলা ফ্লেভারের উৎপাদন অজনপ্রিয় হওয়ার কারণে বন্ধ করে দিয়েছিল। ডায়েট কোকেরও হয়েছিল একই পরিণতি।
কোমল পানীয়ের ভোক্তারা উচ্চ চিনি যুক্ত পানীয় থেকে ঝুঁকে পড়ছে ‘স্পার্কলিং ওয়াটার’ এবং ‘হাইড্রেশন’ পানীয়ের দিকে। ভোক্তাদের এই পরিবর্তিত বাস্তবতায় কোকা-কোলারও নিতে হচ্ছে নতুন নতুন কৌশল।