উরুগুয়ে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আর্জেন্টিনার সঙ্গে যৌথভাবে রেকর্ড ১৫ বারের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নও। সেখানে কলম্বিয়া কখনো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডিই পার হতে পারেনি। কোপায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার, ২০০১ সালে। এরপর আর ফাইনালেও পৌঁছাতে পারেনি।
সেই কলম্বিয়া ২৩ বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে নাম লেখাল কোপার ফাইনালে। আজ সেমিফাইনালে তারা ১-০ গোলে হারায় উরুগুয়েকে। দীর্ঘ খরা কাটিয়ে ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন কলম্বিয়ার হামেস রোদ্রিগেসসহ আরও অনেকে। এটা আনন্দাশ্রু।
৩৯ মিনিটে কলম্বিয়ার হয়ে একমাত্র গোলটি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জেফারসন লেরমার।
বিরতির ঠিক আগে লাল কার্ড দেখেছিলেন কলম্বিয়ান রাইট ব্যাক দানিয়েল মুনোজ। উরুগুয়ের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মানুয়েল উগার্তেকে কনুই মেরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। বাকি সময় ১০ জন নিয়েও উরুগুয়েকে গোল করতে না দেওয়াটা কৃতিত্বের কলম্বিয়ার জন্য। এই জয়ে টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত রইল তারা। ফাইনালে কলম্বিয়া খেলবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।
মার্সেলো বিয়েলসার হাত ধরে এবার শিরোপার অন্যতম ফেবারিট ছিল উরুগুয়ে। সেমিফাইনালে তারা হারিয়েছে ব্রাজিলকেও। সেখানে ১০ জনের কলম্বিয়ার সঙ্গে জিততে না পারাটা তাদের জন্য হতাশার।
এজন্যই কিনা ন্যাক্কারজনক এক কাণ্ড ঘটালেন উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা। দারউন নুনিয়েজ, রোনালদ আরাউহোসহ একাধিক উরুগুয়ের খেলোয়াড় কলম্বিয়ার সমর্থকদের মারতে ছুটে যান গ্যালারিতে। এ নিয়ে ঝড় উঠেছে সমালোচনার। এই খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রেফারির শেষ বাঁশির পর মাঠে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। তখন উত্তেজিত দেখাচ্ছিল লুইস সুয়ারেসকে। এর রেশ ছড়িয়ে পড়ে গ্যালারিতে। ঠিক কী হয়েছিল জানা যায়নি স্পষ্টভাবে। তবে যেটা ঘটেছে তা ফুটবলের জন্য রীতিমতো কলঙ্ক।
নুনিয়েজ ছিলেন বেশি উত্তেজিত, তাকে সামলানো যাচ্ছিল না কোনওভাবে। কলম্বিয়ার কয়েকজন সমর্থকের সঙ্গে ঘুষি চালাচালি করতে দেখা গেছে তাকে।
এর আগে ব্রাজিল সফরে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দেরও ছুটে যেতে দেখা গিয়েছিল গ্যালারিতে। তবে সেটা ছিল পুলিশের হাত থেকে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে।
৩৯ মিনিটে হামেস রোদ্রিগেসের কর্নার থেকে করা হেডে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন জেফারসন লেরমার। এবারের কোপায় এটা রোদ্রিগেসের ষষ্ঠ অ্যাসিস্ট। তাতে তিনি ভাগ বসিয়েছেন ব্রাজিলিয়ানি কিংবদন্তি পেলের একটি রেকর্ডে। মর্যাদার টুর্নামেন্টে লাতিন খেলোয়াড়দের মধ্যে ১৯৭০ বিশ্বকাপে পেলের অ্যাসিস্টও ছিল ৬টি।
এছাড়া হেডে এবারের কোপায় পঞ্চম গোল পেল কলম্বিয়া। ১৯৯৩ কোপায় শিরোপা জয়ের পথে হেড থেকে ৬ গোল পেয়েছিল আর্জেন্টিনা।
কলম্বিয়া ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার সুযোগটা নিতে পারেনি উরুগেুয়ে। একাধিক সুযোগ নষ্ট করেন দারউইন নুনিয়েজ। ৭১ মিনিটে উরুগুয়ের হয়ে রেকর্ড ৬৮ গোল করা লুইস সুয়ারেসের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। তাতে ধাক্বা খায় উরুগুয়ের ফাইনাল স্বপ্নও। সেই হতাশাতেই কিনা সমর্থকদের মারতে গ্যালারিতে চলে যান উরুগুয়ের ফুটবলাররা!