বিভিন্ন পর্যায়ের কোম্পানিগুলোর ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত করহার কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে, শুধু শর্ত মানলেই পাওয়া যাবে এই সুবিধা।
বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশনে বাজেট বক্তৃতায় এসব তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে বুধবার। এটি চলতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় এবং প্রথম বাজেট অধিবেশন।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন কোম্পানির আয়করের হার কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। দেশের অর্থনীতিকে অধিকতর আনুষ্ঠানিক করতে এবং এক ব্যক্তির কোম্পানি প্রতিষ্ঠা উৎসাহিত করতে আগামী দুই করবর্ষের জন্য করহার সাড়ে ২২ শতাংশ থেকে শর্তসাপেক্ষে ২০ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া আয়কর আইনে সংজ্ঞায়িত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা পাবলিকলি ট্রেডেড নয়- এইসব কোম্পানির ক্ষেত্রে করহার শর্তসাপেক্ষে ২৭.৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের অধিক শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর করা, তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার শর্তসাপেক্ষে ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংম করার প্রস্তাব করা হয়। আর যেসব তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের নিচে শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হয়েছে, তাদের জন্যও শর্তসাপেক্ষে করহার ২৫ শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
তবে শর্ত মানলেই কোম্পানিগুলো করহার কমানোর সুবিধা নিতে পারবে। শর্তগুলো হলো- সব আয় ও প্রাপ্তি এবং প্রতিটি একক লেনদেন ৫ লাখ টাকার বেশি হলে এবং বার্ষিক মোট ব্যয় ও বিনিয়োগ ৩৬ লাখ টাকার বেশি হলে, তা ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে। এক ব্যক্তির কোম্পানিসহ সব ধরনের কোম্পানিকে হ্রাসকৃত করের সুবিধা পেতে হলে ওই শর্ত মানতে হবে।
কিন্তু সবার করহার কমানোর প্রস্তাব হলেও কর-জিডিপি হার বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সমবায় সমিতির করহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সমবায় সমিতির জন্য করহার ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাবলিকলি ট্রেডেড- ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ব্যতীত), পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন- ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সব তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি, পাবলিকলি ট্রেডেড মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি, পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন মোবাইল ফোন কোম্পানির করহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।
জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এর মধ্যে পরিচালনা ব্যয়ের জন্য রাখা হয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার।