দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। বন্দরের ভেতর কন্টেইনারজট কমাতে বেশ কিছু উদ্যোগের পর নতুন নতুন জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এর সুফল এখনও মেলেনি।
বহির্নোঙরে পৌঁছচ্ছে যেসব কন্টেইনার জাহাজ, সেগুলো পাঁচ থেকে সাতদিন অপেক্ষার পর চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারছে। আর জাহাজ থেকে পণ্য ইয়ার্ডে নামিয়ে রাখার পর নানা জটিলতায় বন্দর থেকে ছাড় হচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে বন্দরের ভিতরে কন্টেইনারজট এবং বাইরে জাহাজের জট স্বাভাবিক হয়নি। এতে বন্দর ব্যবহারকারীদের উদ্বেগ কাটছে না।
গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্মের ব্যানারে শুরু হওয়া আন্দোলন অনেক হতাহতের মধ্যে দিয়ে শেষমেষ সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তুঙ্গে ওঠে। গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শূণ্যতা পূরণে গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়।
ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনের সময়কালে দেশজুড়ে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে। এতে দেশের প্রধান এই বন্দরে ব্যাপক আকারে জাহাজজট সৃষ্টি হয়েছে, যার ধাক্কা লেগেছে আমদানি-রপ্তানি খাতে।
রাষ্ট্রক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর বদল হয় চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান। নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বেশ কিছু উদ্যোগ নেন, তবুও বন্দর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
মোটাদাগে চার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। কারণগুলো হলো- সড়কপথে পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া, রেলপথে কন্টেইনার পরিবহনে কাঙ্ক্ষিত গতি না আসা, এখন নয়টি ব্যাংক থেকে পে অর্ডার গ্রহণ না করা এবং সর্বশেষ বন্যার কারণে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকা।
যদিও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব কারণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কোনোভাবেই দায়ী নয়, বন্দরেরর বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ফলে সেই সমস্যা নিরসন না হলে দ্রুত জটের উন্নতি হবে না।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, “বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার পর কন্টেইনারের সংখ্যা ৩৬ হাজার এককে নেমেছিল। কিন্তু সম্প্রতি বন্যার কারণ রেল-সড়কপথ বন্ধ থাকায় ডেলিভারি আবারও কমে গেছে। এতে কন্টেইনারের সংখ্যা আবারও বেড়েছে। আসলে বন্দরের বাইরের কারণগুলোর সঙ্গে তো আমরা সরাসরি জড়িত নয়। এরপরও ধকল আমাদের নিতে হচ্ছে।
“আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতির জন্য। এজন্য সড়ক-রেলপথের বদলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি নৌপথে ঢাকার পাঁনগাও ইনল্যান্ড কন্টেইনার টার্মিনাল থেকে পণ্যছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ
একটি কারখানা থেকে রপ্তানি পণ্য তৈরি করে সড়কপথে প্রথমেই চট্টগ্রামের আশপাশে অবস্থিত বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে পৌঁছে। সেখান থেকে কাস্টমের অনুমতিসাপেক্ষে কন্টেইনারভর্তি হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে। আর জেটিতে থাকা জাহাজে সেই কন্টেইনার জাহাজীকরণ হয়েই বিদেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছে। কিন্তু মধ্য জুলাই থেকেই সেই পুরো প্রক্রিয়া এলোমেলো হয়ে পড়ে। ফলে কারখানা চত্বরে তৈরি পণ্য জমা পড়ে, সড়কপথে পণ্য পরিবহনে শঙ্কা থাকায় সেই পণ্য ডিপোতে পৌঁছেনি। আবার কারফিউ, ইন্টারনেট, ব্যাংক বন্ধ থাকায় ডিপো থেকে পণ্য কাস্টমের অনুমতি পায়নি। আবার ঝুঁকি থাকায় কন্টেইনার ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্য যথাসময়ে বন্দর জেটিতে পৌঁছেনি। আর পণ্য না আসায় জাহাজগুলো বন্দরে ৭২ ঘণ্টার চেয়ে বেশি বসেছিল। এতে করে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে রপ্তানি পণ্যের বিশাল স্তুপ হয়ে গেছে।
২৫ আগস্ট রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ হয়েছে ৪,১৭৪ একক। কিন্তু বাস্তবে এরচেয়ে বেশি রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের কথা।
কন্টেইনার জট
চট্টগ্রাম বন্দরের ভিতর সংরক্ষিত ইয়ার্ডে মোট ৫৩,৫১৮ একক কন্টেইনার রাখার সক্ষমতা আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার দিন ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে ৪১,৫৮১ একক কন্টেইনার জমেছিল। সর্বশেষ ২৫ আগস্ট সেটি দাঁড়ায় প্রায় ৩৮ হাজার এককে। ফলে গত ১৭ দিনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কন্টেইনার ছাড় হয়নি।
কন্টেইনারজট বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, বন্দর থেকে আমদানি পণ্যছাড় এবং রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ স্বাভাবিক না থাকা। বন্দরের ২৫ আগস্টের হিসাবে, জাহাজ থেকে আমদানিপণ্যভর্তি কন্টেইনার নেমেছে ৪,৮৭৪ একক, কিন্তু সমপরিমাণ পণ্য বন্দর থেকে ছাড় নেয়নি আমদানিকারকরা। সেদিন বন্দর থেকে ছাড় হয়েছে মাত্র ১,৬৪৭ একক কন্টেইনার; ফলে একদিনেই ৩,২২৭ একক কন্টেইনার বন্দরের ভিতর জমে গেছে। এভাবে জুলাই মাসের মধ্যভাগ থেকেই প্রতিদিন কন্টেইনার একটু একটু করে জমেছিল।
জাহাজজট
জুলাই মাসে শুরুতে একটি কন্টেইনার জাহাজ বহির্নোঙরে পৌঁছার পর চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়তে সময় লাগতো তিনদিন। অর্থাৎ তিনদিন অপেক্ষার পর জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারতো আর এটিকেই স্বাভাবিক অপেক্ষমান সময় ধরে নিয়েই জাহাজ চালান শিপিং লাইনগুলো। কিন্তু জুলাইয়ের শেষদিক থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠায় সেই ধারাবাহিকতায় ছন্দপতন হয়। জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামানো দেরি হয়। আবার কন্টেইনার নামানোর পর রপ্তানি পণ্যের জন্য জাহাজকে জেটিতেই বাড়তি সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে জাহাজের শিডিউল এলোমেলো হয়। আর প্রভাবে বহির্নোঙরে জাহাজের দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। এখন এই দীর্ঘ লাইনের জাহাজকে স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের বহির্নোঙরে এখনও ১২টি কন্টেইনার জাহাজ পণ্য নিয়ে অপেক্ষমান আছে।
২৫ আগস্টের হিসাবে, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে একটি ক্রেনবিহীন কন্টেইনার জাহাজকে সাতদিন অপেক্ষার পর বন্দর জেটিতে ভিড়তে হয়েছে। আর ক্রেনযুক্ত জাহাজকে ভিড়তে হয়েছে ছয়দিন অপেক্ষার পর। ফলে বহির্নোঙরেই বাড়তি তিন থেকে চারদিন জাহাজকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
এই বাড়তি প্রতিদিনের জন্য ১০ থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। এই ভাড়া পণ্য পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আবার রপ্তানি পণ্য নির্দিষ্ট গন্তব্যে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ দেরি হলে অনেক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর মাশুল গুনতে হয় পণ্যের দাম থেকে ডিসকাউন্ট দিয়ে অথবা জাহাজের বদলে উড়োজাহাজে পণ্য পাঠিয়ে।
“এখন দুই উপায়ে পণ্য পাঠাতে গেলে আমাদের মুনাফার অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। কারণ, পণ্য উৎপাদন থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর জন্য আমাদের কস্টিং ঠিক করা থাকে। এর বেশি খরচ হলে মুনাফা থেকেই বাদ পড়ে। ফলে আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।”
এদিকে কন্টেইনারজট কমাতে চট্টগ্রাম বন্দরের বেশ কিছু উদ্যোগের পর ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বন্দরের ভিতর কন্টেইনার রাখার পরিমান কমে ৩৬ হাজারে নেমেছিল। এসব উদ্যোগের মধ্যে ছিল রেলপথে ঢাকাতে যেসব পণ্য পরিবহন হতো সেটি সড়ক কিংবা নৌপথে এমনকি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি ছাড়ের সুযোগ। কিন্তু সেই সুফল ভোগ করা শুরুর আগেই শিপিং এজেন্টকে পে অর্ডার জমা নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা।
বেনামি ঋণ এবং অর্থপাচার ঠেকাতে ১৯ আগস্ট এক নির্দেশনায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংক থেকে ঋণ বিতরণ ও এলসি খোলা বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এর মধ্যে পে অর্ডার ইস্যু না থাকলে সতর্কতা হিসেবে শিপিং এজেন্টগুলো সেই পে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ছয়টি ব্যাংক থেকে ইস্যু করা বিপুল পে অর্ডারের বিপরীতে পণ্য ছাড় নিতে না পেরে আটকা পড়ে বন্দরে। কবে নাগাদ সেই জটিলতা নিরসন হবে তার নিশ্চয়তা মিলছে না।
এর বাইরে আরও তিনটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে দেওয়া পে অর্ডার নিচ্ছে না শিপিং লাইনগুলো। সেগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।
এই নয়টি ব্যাংক থেকে কী পরিমাণ পে অর্ডার আটকে আছে, তা অবশ্য জানা যায়নি।
শিপিং লাইনে পে অর্ডার জমা দেওয়ার কাজটি করে সিঅ্যান্ডএফ কর্মীরা। বিদেশি শিপিং লাইনে গিয়ে তাদের প্রতিদিনই ফেরত আসতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “পে অর্ডার মানেই কিন্তু নগদ টাকা। সরকার কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তো ব্যাংকগুলো বন্ধ করেনি, আবার পে অর্ডার নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। সুতরাং শিপিং লাইনগুলো কেন এমন আচরণ করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটির দ্রুত সমাধান না আসলে বন্দর থেকে দ্রুত পণ্যছাড় হবে না।”
কী পরিমাণ পে অর্ডার ফেরত আসছে- সেই তথ্য নেই বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা বিদেশি শিপিং লাইনের দেশীয় প্রতিনিধি বা এজেন্ট হিসেবে কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করি। এখন যে ব্যাংকগুলো থেকে পে অর্ডার ইস্যু করা হয়েছে, তার বিপরীতে যদি অত টাকা ক্যাশ না থাকে তাহলে আমরা তো আটকে যাব। সেজন্যই সতকর্তা হিসেবে এই পদক্ষেপ।
“এরই মধ্যে আমাদের কাছে ইসলামী ব্যাংক থেকে একটি প্রতিনিধিদল এসেছে। তাদের আমরা বিষয়গুলো অবহিত করেছি। এবং তাদের বক্তব্য আমাদের জানাতে বলেছি। আর বিকল্প হিসেবে অন্য ব্যাংক থেকে পে অর্ডার ইস্যুর প্রস্তাব দিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।”
পে অর্ডার জটিলতা চলতে থাকার সময় ফেনী, কুমিল্লা এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ায় চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গত ২৪ আগস্ট ১,৯২৯ একক এবং ২৫ আগস্ট ১,৬৪৭ একক পণ্য ডেলিভারি হয়। স্বাভাবিক সময়ে যা ছিল ৪ হাজার একক কন্টেইনার। এতে করে বন্দরের ভিতর আবারও কন্টেইনারের পরিমাণ বেড়ে ৩৮ হাজার এককে উন্নীত হয়।
ঢাকাগামী কন্টেইনার খালাসে পরামর্শ
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ঢাকাগামী আমদানি পণ্যের কন্টেইনার ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দরে জমে থাকা এসব কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দর এবং পানগাঁও আইসিডি থেকে ডেলিভারি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রতি এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে জানানো হয়, সাম্প্রতিক আন্দোলনের কারণে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা আইসিডিতে আমদানিকৃত পণ্যের কন্টেইনার আনয়ন বন্ধ হয়ে যায়। তবে জাহাজ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার অবতরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণ সচল থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর প্রান্তে বিপুল পরিমাণ ঢাকা আইসিডিগামী এক হাজার ৮৫৬টি কন্টেইনার জমে যায়। এতে বিপুল পরিমাণ কন্টেইনারের জটে পড়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর।
এমতাবস্থায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঢাকা আইসিডি ঘোষিত আমদানি কন্টেইনারগুলো পণ্য বা কার্গো ঘোষণা সংশোধনের মাধ্যমে ঢাকা আইসিডির পরিবর্তে চট্টগ্রাম বন্দর বা পানগাঁও, আইসিডি হতে ডেলিভারি প্রদানের অনুমতি প্রার্থনা করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে জমে যাওয়া কন্টেইনার দ্রুত খালাস করতে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর এবং পানগাঁও আইসিডি থেকে খালাসের অনুমতি দিয়েছে এনবিআর।”
এনবিআরের এই সিদ্ধান্তের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে চলমান কন্টেইনার জট শিগগিরই নিরসন এবং পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন মু’মেন।