উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে নির্বাচনী প্রচারের সময় লাঞ্ছিত হলেন কংগ্রেসের লোকসভা প্রার্থী কানহাইয়া কুমার। শুক্রবার দিল্লির নিউ উসমানপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
এনডিটিভি বলছে, ভিড়ের মধ্যে সাত থেকে আট জনের একটি দল মালা দেওয়ার নাম করে হঠাৎ কানহাইয়াকে মারধর শুরু করে। এসময় তার দিকে কালিও ছুড়ে মারা হয়। ঘটনাটির ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ভিডিওতে হামলাকারীদের হাতে লাল রং দেখা যায়।
হামলাকারীদের মধ্যে দুইজন আবার ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা কানহাইয়া কুমারকে মারধরের কথা স্বীকার করেছে। তাদের দাবি, কানহাইয়া দেশবিরোধী স্লোগান ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
হামলাকারীরা নিজেদের ‘সনাতনী সিংহ’ দাবি করে ভিডিওতে বলেছে, “আমরা হামলার মাধ্যমে আমাদের জবাব দিয়েছি।”
কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের অভিযোগ, কানাইয়া ভারতকে টুকরো টুকরো করার কথা বলেছিলেন। মূলত ২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির ছাত্রনেতা থাকাকালীন কানহাইয়া যেসব স্লোগান দিয়েছিলেন, সেসব নিয়েই আপত্তি হামলাকারীদের।
জওহরলাল ইউনিভার্সিটি ছাত্র সংসদের সভাপতি থাকাকালে কানহাইয়ার ‘আজাদি‘ স্লোগান ছিল ব্যাপক আলোচিত।
শুক্রবারের হামলার পর কানহাইয়া বলেন, “এসব ঘটনাকে ভয় পাই না আমি। কিছু ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করা যায় না। রাজনীতিতে নারীদের উপর হামলা একেবারেই কাম্য নয়। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।
“আমি কোনও অপরাধ করলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন। কিন্তু গুন্ডা পাঠিয়ে ভয় দেখাবেন না।”
এদিকে আম আদমি পার্টির (এএপি) কাউন্সিলর ছায়া গৌরব শর্মা অভিযোগ করে জানান, তিনি ও কানহাইয়া কারতার নগরের পার্টি অফিস থেকে বের হওয়ার পর ফুলের মালা হাতে ৭-৮ জন তাদের দিকে এগিয়ে আসে। এরপর তারা হঠাৎ করেই কানহাইয়ার দিকে কালি ছোড়ে ও মারধর শুরু করে।
এই ঘটনায় চার নারী ও একজন সাংবাদিকও আহত হয়েছে বলেও জানান ছায়া গৌরব শর্মা। তিনি আরও দাবি করেন, হামলাকারীরা তাকে টেনেহিচড়ে একটি কোণায় নিয়ে গিয়ে তাকে ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ছায়া গৌরব শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতে ভিডিওগুলো যাচাই করে তদন্ত শুরু করেছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, কানহাইয়ার উপর হামলাকারীরা স্থানীয় বিজেপি কর্মী। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ছাত্রনেতা থাকাকালে গোটা ভারতে পরিচিতমুখ হয়ে ওঠা কানহাইয়া পরে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই) প্রার্থী হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন।
কানহাইয়ার নির্বাচনী এলাকা বিহার। তবে এবার কংগ্রেস তাকে উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে প্রার্থী করেছে। তার আসনে বর্তমান সাংসদ ও অভিনেতা মনোজ তিওয়ারি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী ২৫ মে ওই আসনে ভোটগ্রহণ হবে।
তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, দ্য হিন্দু