Beta
সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

রেফারি নাসির উদ্দিনের এ কেমন সিদ্ধান্ত

রহমতগঞ্জ-বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচে রেফারি নাসির উদ্দিনের (বল হাতে) বিরুদ্ধে উঠেছে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগ। শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায়। ছবি: বাফুফে।
রহমতগঞ্জ-বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচে রেফারি নাসির উদ্দিনের (বল হাতে) বিরুদ্ধে উঠেছে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগ। শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায়। ছবি: বাফুফে।
[publishpress_authors_box]

ঘরোয়া ফুটবলে নানা কারণে আলোচনায় থাকেন রেফারিরা। কখনো রেফারিদের সময়মতো সম্মানী পরিশোধ করা হয় না। কখনো ম্যাচ পরিচালনায় বিতর্কে জড়ান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আলোচনায় থাকেন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে। শুক্রবার প্রিমিয়ার ফুটবলে বসুন্ধরা কিংস ও রহমতগঞ্জের ম্যাচেও তেমনি একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিলেন রেফারি নাসির উদ্দিন।

রহমতগঞ্জের সুশান্ত ত্রিপুরাকে ঘাড় চেপে মাটিতে ফেলে দিয়েও কোনও কার্ড দেখলেন না বসুন্ধরা কিংসের ফরোয়ার্ড মিগেল ফেরেইরা!

ঘটনাটা বিরতিতে যাওয়ার খানিক আগের। বল নিয়ে আক্রমণে উঠছিলেন বসুন্ধরা কিংসের মিগেল ফেরেইরা। কিন্তু তাকে পেছন থেকে বৈধ ট্যাকল করেন রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। বল মিগেলের কাছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ বাঁ হাত দিয়ে ঘাড় চেপে ধরে সুশান্তকে ফেলে দেন মাঠে।

মুহূর্তেই রেফারি নাসির ছুটে আসেন সেখানে। তাকে কিছু একটা বোঝাতে দৌড়ে আসেন বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন। মাঠে তখন মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায় সুশান্তকে। আর তাকে ওঠানোর চেষ্টা করেন মিগেল।

দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে তখন তুমুল উত্তেজনা। মিগেলের আচরণের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন রহমতগঞ্জের ফুটবলাররা। কিছুক্ষণ খেলাও বন্ধ রাখেন রেফারি।

অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হলে একটু পর খেলা শুরু করেন রেফারি নাসির। কিন্তু তিনি কোনও ফুটবলারকেই কার্ড দেখাননি।

অথচ এই ম্যাচে এর চেয়েও কম ফাউলের কারণে বসুন্ধরা কিংসের সোহেল রানা ও বিশ্বনাথ ঘোষকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন রহমতগঞ্জের রকিকেও। কিন্তু এমন বড় ঘটনাতে কার্ড না দেখায় আশ্চর্য হয়েছেন রহমতগঞ্জের কোচ শেখ জাহিদুর রহমান, “রেফারির পকেট থেকে কার্ড বের হতে না দেখে খুব অবাক হয়েছি। রেফারি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কারও পক্ষে কোনও সিদ্ধান্তে নেয় সেটা খুব হতাশাজনক। ওরা আমাদের এন্টারটেন করবে। কিন্তু সেটা তো করে না। অন্তত হলুদ কার্ড তো দেখাতে পারতোই । আমি ৭টা ম্যাচ অপরাজিত ছিলাম। আজও জেতা ম্যাচ ছিল। কিন্তু রেফারিদের সিদ্ধান্ত হতাশ করেছে। মিগেলকে লাল কার্ড দিলে ওটাই হতে পারতো ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। আমার ফরোয়ার্ডদের জার্সি টেনে ধরেছে বারবার। কিন্তু রেফারি কিছুই বলেনি।”

ঘরোয়া ফুটবলে রেফারিদের এমন ছাড়ের প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। গত ডিসেম্বরে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভিয়েতনামের রেফারির প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে উড়িষ্যা এফসির কাছে হেরে যায় বসুন্ধরা কিংস। ওই ম্যাচে কিংসের মিডফিল্ডার আসরর গফুরভকে লাল কার্ড দিয়েছিলেন রেফারি। সেই জেরে ১০ জন নিয়ে খেলে হেরে যায় কিংস, বিদায় নিতে হয় এএফসি কাপ থেকেই।

রহমতগঞ্জ কোচ শেখ জাহিদুর এটা মনে করিয়ে দিয়ে বলছিলেন, “এভাবে ঘরের মাঠে আমাদের ফুটবলাররা পার পেয়ে যায়, কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তু নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”  

সুশান্তকে বল ছাড়া যেভাবে আঘাত করেছেন মিগেল, সেটাতে অন্তত একটা কার্ড দেখতেই পারতেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেফারি সকাল সন্ধ্যাকে সেটাই বললেন, “নিয়মে উল্লেখ আছে বল ছাড়া ঘুষি বা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে সরাসরি লাল কার্ড দেখাতে হবে। এখানে হলুদ কার্ড তো দিতেই পারতো। কিন্তু কোনও কার্ডই তো দিল না। এটা দেখে আমি অবাকই হয়েছি।”

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রেফারি নাসির উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত