জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডসহ তিনটি মামলায় জামিন পেয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ।
মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মাসেদুল হক রাশেদকে জামিন দেওয়ায় বিচারকের প্রত্যাহার দাবিতে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এক দল শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার রাশেদের পক্ষে আদালতে জামিন শুনানিতে বিএনপি ও জামায়াতে অসংখ্য আইনজীবী অংশ নিলেও এই দুই দলের সমর্থিত আইনজীবীরাও শিক্ষার্থীদের বুধবারের ঘেরাও কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।
মঙ্গলবার শুনানিতে আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকীর জিম্মায় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
মামলাটির জামিন শুনানিতে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সিদ্দিকী ছাড়াও জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধরী ও আবদুল মান্নানও ছিলেন। আবুল কালাম সিদ্দিকী বিএনপি-জামায়ত সমর্থিত প্যানেলে আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫। পরে তাকে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ১৭ আগস্ট কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায়ও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মাসেদুল হক রাশেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
তার জামিনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বুধবার দুপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী’ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আদালত চত্ত্বরে গিয়ে বিচারকের প্রত্যাহারের দাবি জানান। এসময় বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী ও আইনজীবীরা। তারা বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে গিয়ে বিচারকরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে জামিন দিচ্ছেন। এতে তাদের দ্রুত পুনর্বাসনের সুযোগ হবে। তাই বিচারকের প্রত্যাহার চায় তারা।
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকী বলেন, রাশেদকে যে ৩টি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, ওই মামলার এজাহারভছুক্ত আসামি নন তিনি। একইসঙ্গে কারাকর্তৃপক্ষ আদালতে রাশেদ গুরুতর অসুস্থ বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে। সব বিবেচনায় আদালত এই মামলায় রাশেদেকে তার (আবুল কালাম সিদ্দিকী) জিম্মায় জামিন দেন। এটা ন্যায় বিচারের অংশ।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে আমি নিজেও মামলার আসামি হয়ে কারাভোগ করেছি। অ্যাডভোকেট মান্নানসহ আর অনেক আইনজীবী নিজেও কারাভোগ করেছেন।
“ওই সময় আমাদের জামিনের ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থায় নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল। এখন আবারও তা করা যাবে না। বিচারিক ব্যবস্থাকে আইনের গতিতে চলতে দিতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের ঘেরাও কর্মসূচির কারণে বুধবার আদালতের কার্যক্রম বিলম্বে শুরু হয়।