অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে সাজাপ্রাপ্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) সহযোগী বাসুদেব ও তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই দম্পতিকে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।
সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান এবং বাসুদেব দম্পতির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন।
গত বৃহস্পতিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জি ও পাপিয়া ব্যানার্জিকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছিল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে ২০২১ সালে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৫২টি মামলা হয়। এর মধ্যে ১৫টি মামলার আসামি বাসুদেব দম্পতি।
এই ১৫ মামলায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।
দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন পি কে হালদার।
প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করতে আগেই শেয়ার কিনে প্রতিষ্ঠান চারটির নিয়ন্ত্রণ নেন পি কে হালদার।
২০২০ সালের শুরুতে এই আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ওই বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
অবশ্য তার আগেই ২০১৯ সালের শেষে দেশ ছেড়ে ভারতে পালান পি কে হালদার।
২০২২ সালের মে মাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
তিনি বর্তমানে ভারতের কারাগারে আছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশের আদালতে পি কে হালদারের সাজা হয়। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দায়ে তাকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
এছাড়া তার ১৩ সহযোগীকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে আরও ৩৫টি অর্থ পাচার মামলার তদন্ত চলছে।