Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন : ইউরোপের আদালতের রায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ

রায়ের পর সুইস অভিযোগকারীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: রয়টার্স
রায়ের পর সুইস অভিযোগকারীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: রয়টার্স
[publishpress_authors_box]

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভুক্তভোগী একদল সুইস নারী ফ্রান্সের স্ত্রাসবুহ শহরে ইউরোপের মানবাধিকারবিষয়ক এক আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এই নারীদের প্রত্যেকের বয়স সত্তরের কোঠায়। 

তাদের অভিযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রুত পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে সুইজারল্যান্ড সরকার তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটিয়েছে।

সুইজারল্যান্ডে তাপপ্রবাহের সময় তারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারেন না, শারীরিক নানা সমস্যায় ভোগেন, এমন অভিযোগ তুলে মামলাটি করেছিলেন তারা।

ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস মঙ্গলবার সুইস নারীদের অভিযোগের পক্ষে রায় দেয়।

১৭ সদস্যের বিচারকের প্যানেল রায়ে বলে, কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি সুইজারল্যান্ড। জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে পদক্ষেপ না নেওয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

এই প্রথম প্রভাবশালী ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস বৈশ্বিক উষ্ণতার ওপর কোনও রায় দিল, যা ভুক্তভোগীদের পক্ষে গেছে। এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত মামলায় আংশিক জয় পেলেন ওই সুইস নারীরা, যারা ‘সিনিয়র উইমেন ফর ক্লাইমেট প্রোটেকশন’ নামে পরিচিত এখন। 

বাসযোগ্য পৃথিবীতে মানুষের বাঁচার অধিকারকে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা কীভাবে প্রভাবিত করছে, এ সংক্রান্ত ভবিষ্যতের মামলা-মোকদ্দমার ক্ষেত্রে এই রায় নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে তাপমাত্রা।

বিবিসি ও রয়টার্স জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের রায়টি বাধ্যতামূলক। এর বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের ৪৬টি দেশের আইনের ওপর এই রায় প্রভাব ফেলতে পারে। 

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে-এই প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার ইউরোপীয় মানবাধিকারবিষয়ক আদালতটি কী বলে, তা জানতে উৎসুক ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এদিন সুইস নারীদের মামলা ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর আরও দুটি মামলা আদালতে তোলা হয়।

পর্তুগালের ছয় তরুণ ও ফ্রান্সের এক সাবেক মেয়র বাকি দুটি মামলা করেছিলেন। মামলার অভিযোগে পর্তুগিজ তরুণরা বলে, ইউরোপীয় সরকারগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, পর্তুগিজ তরুণরা কোনও ক্ষতিপূরণের দাবি করেনি। কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানান তারা।

অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্স সরকারের অস্বীকৃতিকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন সাবেক ফরাসি মেয়র দেমিয়েন কেরিম।        

আদালত সুইস নারীদের পক্ষে রায় দিলেও বাকি দুটি মামলা খারিজ করে দেয়। 

রায় ঘোষণার আগে আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্লাইমেট লিটিগেশন নেটওয়ার্কের সহপরিচালক লুসি ম্যাক্সওয়েল বলেন, “কারা মামলা করেছে, কোন সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, কী দাবি করা হচ্ছে-এসব বিবেচনায় মামলা তিনটি বেশ আলাদা।”     

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত