Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

ল্যাব থেকে সৃষ্টি কোভিড মহামারি, যুক্তরাষ্ট্রের উপকমিটির প্রতিবেদন

Uhan Lab
[publishpress_authors_box]

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের একটি কমিটি কোভিড-১৯ মহামারীর কারণ হিসেবে ‘ল্যাব লিক’ তত্ত্ব সমর্থন করেছে।

সোমবার করোনাভাইরাস সংকট সম্পর্কিত প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত উপকমিটি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে কোভিড-১৯ ‘সম্ভবত একটি গবেষণাগার বা গবেষণা সংক্রান্ত দুর্ঘটনার কারণে হয়েছে’ বলে অনুমান করা হয়।

৫২০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনটি দুই বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে। এতে মহামারী মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্য সরকারগুলোর প্রতিক্রিয়া, এর উৎস ও টিকা প্রয়োগের উদ্যোগ পর্যালোচনা করা হয়েছে।

রিপাবলিকান দলের সদস্য ব্র্যাড ওয়েনস্ট্রাপ কংগ্রেসে এক চিঠিতে জানান, “এই কাজটি যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশকে পরবর্তী মহামারী ভবিষ্যদ্বাণী, প্রস্তুতি, সুরক্ষা ও প্রতিরোধে সাহায্য করবে।”

প্রতিবেদনটির প্রধান উপসংহারে বলা হয়েছে, মহামারী শুরুর আগে চীনের উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে ‘গেইন-অফ-ফাংশন’ গবেষণা পরিচালনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএস) বিতর্কিতভাবে অর্থায়ন করেছিল।

কোভিড-১৯ এর প্রথম রোগী চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শনাক্ত হয়। শহরটিই কভিড-১৯ ভাইরাসের উদ্ভবস্থল, এমনটা বিশ্বাসও করেন অনেকে।

ভাইরাসটি দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৭০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। দেশগুলো সীমান্ত বন্ধ করে এবং লকডাউন ঘোষণা করায় বিশ্ব অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯ এর উৎস নির্ধারণে চেষ্টা করেছেন। তবে তারা এখনও নির্দিষ্ট কোনও মত দেননি।

অনেক গবেষকের বিশ্বাস, ভাইরাসটির উৎস জুনোটিক, অর্থাৎ প্রাণী থেকে মানবদেহে ছড়িয়েছে।

তবে গত বছর এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে, ভাইরাসটি সম্ভবত একটি ল্যাব থেকে বাইরে চলে এসেছে।

মন্ত্রণালয়ের এই মূল্যায়ন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) মতামতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সংস্থাটি ২০২১ সালে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিল যে, ভাইরাসটি সম্ভবত একটি ল্যাব দুর্ঘটনার পর ছড়িয়েছে।

হাউস কমিটি গত দুই বছরে ২৫টি বৈঠক, ৩০টিরও বেশি সাক্ষাৎকার এবং দশ লাখেরও বেশি পৃষ্ঠার নথি পর্যালোচনা করার পর ‘ল্যাব লিক’ তত্ত্ব নিশ্চিত হয়েছে।

তদন্তের অংশ হিসেবে, রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস কমিটির সদস্যরা দুই দিনব্যাপী সাক্ষাৎকার নেন অ্যান্থনি ফাউচির। তিনি মহামারীর শুরুর দিকে জনস্বাস্থ্য বার্তা পরিচালনা করেছিলেন। পরে ভাইরাসের উৎস নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিষয় হয়ে ওঠেন।

ফাউচি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫৪ বছর বয়সে এনআইএইচ থেকে অবসর নেন। তার প্রতি রিপাবলিকানদের অভিযোগ, তিনি সার্স-কভ-২ ভাইরাস তৈরি করা চীনা বিজ্ঞানীদের জন্য অর্থায়ন অনুমোদন করে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারী সৃষ্টি করেছেন।

ফাউচি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় নিয়মিত বিরোধিতায় লিপ্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চীনে ল্যাব লিক থেকে কোভিড-১৯ উৎপত্তি হওয়ার তত্ত্ব দমনের অভিযোগও রয়েছে।

ফাউচি এখন তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির কারণে নিরাপত্তা সুরক্ষা নিয়ে বাস করছেন। গত জুনে একটি পাবলিক শুনানিতে তিনি বলেন, উহান ল্যাবে পরীক্ষার জন্য রাখা বাদুড়ের ভাইরাসগুলোর জন্য মহামারী সৃষ্টিকারী ভাইরাসে পরিণত হওয়া ‘মলিকুলারভাবে অসম্ভব’ ছিল।

ফাউচি বলেন, “আমি বহুবার স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আমি মনে করি না যে ল্যাব লিকের ধারণা স্বাভাবিকভাবে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব।

“যে বিষয়টি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তা হলো, যেমন- এটি একটি ল্যাব লিক ছিল এবং আমাকে জেসন বর্ণের (হলিউডের নায়ক) মতো সিআইএতে পাঠানো হয়েছিল। আর সিআইএ-কে বলা হয়েছিল যে, তাদের ল্যাব লিক নিয়ে কথা বলা উচিত নয়।”

তদন্তে আরও দেখা গেছে, লকডাউন ‘সামগ্রিকভাবে বেশি ক্ষতি করেছে’ এবং মাস্ক পরার নির্দেশনা ‘কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে অকার্যকর’ ছিল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত