কক্সবাজারের এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ হত্যা মামলায় পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রধান শিক্ষককে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম শহরের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকা থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিজ এলাকা থেকে অপহরণের শিকার হন পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ।
স্বজনদের অভিযোগ, জাহাঙ্গীর আলম এবং তার ভাই পেকুয়া যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আজমগীর আলম মিলে তাকে অপহরণ করে। অপহরণকারীরা ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণও দাবি করেছিল।
অপহরণের ১৪ দিন পর গত শুক্রবার বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আরিফের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ইটভর্তি বস্তায় ছিল।
প্রধান শিক্ষক আরিফের মরদেহ উদ্ধারের পর উত্তেজিত জনতা জাহাঙ্গীর-আজমগীরের বাড়ি ও মার্কেট ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়।
আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করে মামলা করা হয়।
আরিফের মরদেহ উদ্ধারের পর পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা বলেছিলেন, “এ ঘটনায় করা মামলায় রুবেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তার কাছ থেকে।
“এ হত্যাকাণ্ডে জাহাঙ্গীর ও আজমগীর এই দুই ভাইকে দায়ী করছেন আরিফের স্বজনরা। তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি কক্ষে রক্তের দাগ ও আলামত পাওয়া গেছে। সেসব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রক্ত কার, তা পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
কক্সবাজার র্যাব কার্যালয়ে রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক জানান, গত শনিবার গভীর রাতে র্যাব-১৫ ও র্যাব-৭ এর একটি যৌথ দল চট্টগ্রামের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে।
হত্যার কারণ সম্পর্কে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, “আরিফের সঙ্গে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীরের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল দীর্ঘ দিন। এই বিরোধের জেরে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আরিফকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করেন জাহাঙ্গীর। গ্রেপ্তারের পর রুবেল ও জাহাঙ্গীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, আরিফকে অপহরণ, ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, হত্যাকাণ্ড এবং বস্তাবন্দি করে পুকুরে লাশ গুম করার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”