কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিনজনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। উখিয়ার চার নম্বর ক্যাম্পের এক্সটেনশনে সোমবার ভোরের এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন আরও সাতজন রোহিঙ্গা।
ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও থানা পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। জানা গেছে, হতাহত সবাই মিয়ানমারের আরেক সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্য।
নিহতরা হলেন- চার নম্বর ক্যাম্পের জাফর আহমেদের ছেলে মো. ইলিয়াছ (৩১), আবদুর রকিমের ছেলে মো. ইছহাক (৫৪) ও তিন নম্বর ক্যাম্পের মো. ইসমাইলের ছেলে ফিরোজ খানঁ (১৮)।
আহতদের মধ্যে তিনজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- চার নম্বর ক্যাম্পের মো. হাছানের ছেলে আব্দুল হক (৩২), নজির আহমদের ছেলে আব্দুস শুক্কুর (৫৫) ও ওমর মিয়ার ছেলে আব্দুল মোনাফ (৬০)।
আহতরা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এনজিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল জানান, ভোরে ৪০-৪৫ জন আরসা সন্ত্রাসী পাহাড় থেকে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে চার নম্বর ক্যাম্পে আসে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্যাম্পে পাহারারত রোহিঙ্গা ইলিয়াছকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ইলিয়াস ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এসময় আরসা সন্ত্রাসীরা সাধারণ রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে আহত হন আরও নয় জন। ঘটনাস্থলে গেলে এপিবিএন সদস্যদের ওপর গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পুলিশ পাল্টা ১৬ রাউন্ড শটগানের গুলি চালায়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের দুইজন মারা গেছেন।
এপিবিএন কর্মকর্তা ইকবাল জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার ও নাশকতার চেষ্টা করছে আরসা। মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়েছে আরসার সন্ত্রাসীরা। গুলি করে এবং কুপিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন জন। হতাহতরা আরএসও সদস্য বলে জানা গেছে।
উখিয়া থানার পরিদর্শক মো. শামীম হোসেন বলেন, নিহত তিন রোহিঙ্গার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।