Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

টেকনাফের প্লাবিত এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে

প্লাবিত অনেক এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
প্লাবিত অনেক এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

নাফ নদীর নির্মাণাধানী কয়েকটি স্লুইসগেইট এলাকায় পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় পাহাড়ি ঢল আর ভারি বর্ষণে বুধবার প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম। পানি প্রবাহের বিকল্প ব্যবস্থা করায় এবং নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় সেসব এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার পাহাড়ি ঢল আর প্রবল বর্ষণে টেকনাফ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন ও পৌরসভার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৮ গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২ গ্রাম, টেকনাফ পৌর এলাকার ৭ গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের ৭ গ্রাম ও বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০ গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল এসব গ্রামের প্রায় ৮ হাজার পরিবারের ২৫ হাজার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাফ নদীতে কয়েকটি স্লুইস গেইট হচ্ছে। সেখান দিয়ে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে না পারায় কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়। পরে বাঁধের বিভিন্ন অংশে কেটে দেওয়া হয়। রাত থেকে আর বৃষ্টি না হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে।

হ্নীলার লামারপাড়ার বাসিন্দা আলী আকবর জানান, পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে তার বাড়িতে কোমর সমান পানি হয়েছিল। বাড়ির অধিকাংশ জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। বুধবার বিকালের পর আর বৃষ্টি হয়নি। পানি নেমে যাচ্ছে।

একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, তাদের গ্রামের রাস্তার একটি অংশ ভেঙে যাওয়ায় মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। উচু জায়গার পানি নেমে গেলেও নিচু জায়গার পানি নামতে সময় লাগতে পারে।

ওয়াব্রাং এলাকার বাসিন্দা আলী আহাম্মদ বলেন, ঘরের অধিকাংশ জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র রাত কাটিয়েছেন। পানি নেমে যাওয়াই পরিবারের লোকজন ফিরেছে।

টেকনাফে প্লাবিত এক এলাকা ছবি : সকাল সন্ধ্যা
টেকনাফে প্লাবিত এক এলাকা ছবি : সকাল সন্ধ্যা

হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, হোয়াইক্যংয়ের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী ও সাবরাংয়ের চেয়ারম্যান নূর হোসেন জানিয়েছেন, প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসতে শুরু হয়েছে। নাফ নদীর তীরে নির্মাণাধীন স্লুইস গেইট এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়। 

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে না পারায় প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। নাফ নদীর কয়েকটি স্লুইস গেইট নির্মাণাধীন রয়েছে। সেখানে পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। বাঁধের বিভিন্ন অংশ কেটে দিলে ঢলের পানি নাফ নদীতে যাওয়া শুরু করে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হচ্ছে। তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপসহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেকনাফের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, নাফ নদীর কয়েকটি স্লুইস গেইট নির্মাণাধীন রয়েছে। সেগুলো দিয়ে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে না পারায় কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বাঁধের বিভিন্ন অংশে কেটে দেওয়া হয়। রাতে আর বৃষ্টি না হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত