বেশ কিছুদিন ধরেই কক্সবাজার উপকূলে মৃত মা কচ্ছপ ভেসে আসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ১৭টি কচ্ছপ ডিম দিয়ে নিরাপদে ফিরে গেছে সাগরে। তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৯০টি ডিম।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে কচ্ছপগুলো উপকূলে এসে ডিম দিয়েছে। টেকনাফ উপকূলের উত্তর শীলখালী, ছেপটখালী, মাদারবুনিয়া ও হাবিবছরা পয়েন্ট থেকে কোডেক ন্যাচার অ্যান্ড লাইফ প্রজেক্টের কর্মীরা ১৪টি কচ্ছপের ১ হাজার ৫৯৭ ডিম সংগ্রহ করেছে।
এছাড়া, সোনারপাড়া পয়েন্ট থেকে বোরির কর্মীরা ৩টি কচ্ছপের ২৯৩টি ডিম পেয়েছেন। সব মিলে মোট ১৭টি কচ্ছপের দেওয়া ১ হাজার ৮৯০ ডিম সংগ্রহ করে প্রজেক্টের নিজস্ব হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২ দিনে ২২টি কচ্ছপের দেওয়া ২ হাজার ৪৫৬ ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।
কচ্ছপের ডিম দেওয়ার বিষয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, এখন কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম। সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তারা ডিম দেয়। উপকূলে এসে গর্ত করে ডিম পেড়ে মাটি চাপা দিয়ে তারা আবার সাগরে ফিরে যায়। এরপর প্রাকৃতিকভাবেই ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটে সাগরে ফিরে যায়।
তবে অনেকসময় কুকুর খেয়ে ফেলাসহ আরও নানাভাবে এসব ডিম নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে কয়েকটি সংস্থা। তিনি জানান, সংস্থগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করে নিজস্ব হ্যাচারিতে সংরক্ষণ শুরু করে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে তারা সেগুলো সাগরে ছেড়ে দেয়।
গত প্রায় দুই মাস ধরেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছিল মৃত কচ্ছপ। এগুলোর পেটে পাওয়া যাচ্ছিল ডিম। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ১০৩টি মৃত কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ১১ দিনেই সমুদ্রের তীরে পাওয়া যায় ৫৯টি মৃত কচ্ছপ।
তরিকুল ইসলাম বলেন, “মৃত কচ্ছপগুলো থেকে ৭ শতাধিক ডিম সংগ্রহ করা গেছে। এত এত মৃত কচ্ছপের ভিড়ে দুই দিনে ২২টি কচ্ছপ ডিম দিয়ে সাগরে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি খুব সুখকর।”