অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্যবিরোধীর কথা থাকলেও সেই পথে চলার পদক্ষেপগুলো দেখতে না পাওয়ার কথা জানিয়েছে সিপিডি।
সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের পর তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানায় গবেষণা সংস্থাটি।
সিপিডির পর্যবেক্ষণ, পুরনো কাঠামোর বাজেটের এদিক ও দিক কিছু পরিবর্তন করেই নতুন বাজেট দেওয়া হয়েছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদ খাতুন বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে কাঠামোগত কোনও পরিবর্তন, সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি ওখানে একটু কম এরকম করে নেওয়া হয়েছে।
বাজেটের যে দর্শন বৈষম্যবিহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যটার সাথে বাস্তবের যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সবক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।”
তিনি বলেন, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণেও সমস্যা সবমিলে যে অর্থনৈতিক স্থবিরতা, তা আমলে নিয়েই বাজেট তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করছে সিপিডি।
চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী অর্থ বছরের জন্য তা ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় এটা বড় বলে মনে করছে সিপিডি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি এই তিনটি খাতে এডিপিতে বরাদ্দ কমানোকে চিন্তার এবং উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন ফাহমিদা।
বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার তহবিল একটা ভালো পদক্ষেপ বলে মনে করে সিপিডি।
তবে এখানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেন ফাহমিদা। এই তহবিলের অর্থের ব্যবহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
করের হার বাড়ানো হলেও কালো টাকা সাদা করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “যারা নৈতিকভাবে কর দেয় তাদের প্রতি এটা একটা আঘাত।”
বাজেটে কর-জিডিপির অনুপাত ২০৩৫ সালের মধ্যে সাড়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এতে আমরা আশ্চর্য হয়েছি। আগামী অর্থ বছরে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, তা জিডিপির ৯ শতাংশ। এরপরের দশ বছরে মাত্র দেড় শতাংশ বাড়বে? এটা কেমন লক্ষ্যমাত্রা!”