ফুটবল, অ্যাথলেটিক্স, বাস্কেটবল, টেনিস-সবই আলাদা দেশ হয়ে খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বীপগুলো। শুধু ১৪টা অ্যাসোসিয়েশন এক হয়ে খেলে ক্রিকেট। এটাই পছন্দ নয় সদ্য সাবেক হওয়া আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রশ্ন তুলেছেন আয়ারল্যান্ড আর জিম্বাবুয়ের মতো ছোট দেশগুলোর টেস্ট খেলা নিয়েও।
ইংল্যান্ডের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন তিনি। ১ ডিসেম্বর দেওয়া সাক্ষাৎকার টেলিগ্রাফ প্রকাশ করেছে গতকাল (বুধবার)।
সেই সাক্ষাৎকারে বার্কলে বলেছেন, ‘‘এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে অবস্থায় আছে, তাতে কি টিকতে পারবে ওরা? ওদের জন্য প্রতিটি দ্বীপে ভাগ হয়ে যাওয়ার সময়টা কি এখনই নয়? ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি টেস্ট চালিয়ে যেতে পারবে? ওদের আর্থিক অবস্থা এতই খারাপ যে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। ক্রিকেট ছাড়া তাদের দ্বীপগুলোর মধ্যে কোনো কিছুতেই মিল নেই। তবু নিজেদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ হিসেবে ধরে রেখে ক্রিকেটে যা অর্জন করেছে, অবিশ্বাস্য সেটা।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভেঙে গেলে যে পূর্ণ সদস্য পদ হারাবে সেটাও জানা বার্কলের। তবে পূর্ণ বা সহযোগী সদস্য পদেরও বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের এই ক্রিকেট প্রশাসক, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলতে পারে, আমরা কেন পূর্ণ সদস্য থেকে ১৪টি অ্যাসোসিয়েশনে ভাগ হব? তবে খেলাটার স্বার্থে এটাই ভাবতে হবে। বার্মিংহামে কমনওয়েলথ গেমসে বার্বাডোজ শুধু তাদের অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ভবিষ্যতে কি হবে, এটা তার ছোট্ট ইঙ্গিত? একদিকে পূর্ণ সদস্যদেশ, অন্যদিকে সহযোগী দেশ, এগুলোর বিলোপ করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আইসিসির অর্থ ভাগাভাগি হতে হবে পারফরর্ম্যান্সের ভিত্তিতে।’’
আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের মতো দলগুলোর টেস্ট খেলার বিপক্ষে বার্কলে। তার সরাসরি প্রশ্ন,‘‘আয়ারল্যান্ড কেন টেস্ট ক্রিকেট খেলছে? ওরা আইসিসি থেকে যে অর্থ পায়, সেটা তৃণমূলে কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। যতবারই তারা টেস্ট খেলতে নামে, ততবারই প্রচুর অর্থ হারায়। এর কোনো মানে নেই। জিম্বাবুয়ে কেন টেস্ট খেলছে? ওরাও সম্প্রচার চুক্তিতে লোকসান দেয়। এসবের কোনো অর্থ হয় না।’’
বার্কলের পর আইসিসির চেয়ারম্যান এখন জয় শাহ। তাই খেলাটা যেন ভরতের নিয়ন্ত্রনে চলে না যায় সে কথাও বললেন বার্কলে,‘‘সে (জয় শাহ) যে ভিত্তি পেয়েছে, তাতে ভারতের জন্য ক্রিকেটকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার এটাই সুযোগ। তবে খেলাকে ভারতের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেলে হবে না। ভারতকে পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। কারণ সব দিক দিয়েই এই খেলাটিতে বড় অবদান রাখছে ওরা। তবে একটা দেশের এমন ক্ষমতা আর প্রভাব কিন্তু অন্য ভাবমূর্তিকেও বিকৃত করতে পারে।’’