লোহার স্ক্র্যাপ বহনকারী ট্রাক আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতাসহ দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের হালিশহর আবাসিক এলাকার ওয়াপদা মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
আটক ফজলুল করিম চৌধুরী সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। তিনি বর্তমানে হালিশহর থানার পুলিশি হেফাজতে আছেন।
চট্টগ্রামে বিএনপি নেতারা একের পর এক ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে পদ হারিয়েছেন। এস আলম গ্রুপের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর কাজে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়া পদ হারিয়েছেন; ঘটনার জেরে বিলুপ্ত করা হয়েছে সেই কমিটি পর্যন্ত।
এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দশ বছর পর নিজ গ্রামের বাড়ী পেকুয়াতে এস আলম গ্রুপের গাড়িতে চড়ে ফিরতে গেলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। এরপর তিনি দুঃখ প্রকাশ করলেও তার কাছে ব্যাখ্যা চায় বিএনপি। যদিও সেই ব্যাখ্যায় তিনি কী বলেছেন তা এখনও জানা যায়নি।
সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই গত ৪ আগস্ট পটিয়ায় সোনার দোকানের এক কর্মচারীকে বাস থেকে নামিয়ে যুবদল নেতার নেতৃত্বে ৬৫ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অভিযুক্ত পটিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মামুনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে শনিবার পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে জেলা যুবদল।
এক সপ্তাহ ধরে চলা এসব ঘটনার পর শনিবার চাঁদাবাজির অভিযোগ আটক হলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ফজলুল করিম চৌধুরী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমদানিকৃত স্ক্র্যাপ বা লোহার টুকরা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রাকে করে বের হয়ে পোর্ট কানেকটিং রোড হয়ে আবুল খায়ের গ্রুপের সীতাকুণ্ডের কারখানায় যাচ্ছিল। হালিশহরের ওয়াপদা মোড়ে পৌঁছলে চলন্ত ট্রাকের পিছনে উঠে কিছু পথশিশু ও টোকাই ছেলে সেখান থেকে লোহার স্ক্র্যাপ রাস্তায় ফেলছিল।
ট্রাকের চালক ও হেলপার বিষয়টি খেয়াল করলে ওয়াপদা এলাকায় থামে তারা। ট্রাক থেকে নেমে তাদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সেখানে হাজির হন ফজলুল হক চৌধুরী। পরে তিনি ড্রাইভারকে আবুল খায়েরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এসে তার সঙ্গে কথা বলতে চাপ দেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সেখানে হালিশহর থানার টহল পুলিশ পৌঁছে। এসময় পুলিশের সঙ্গেও বাগবিতণ্ডায় জড়ান ফজলুল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বইরে চলে যাচ্ছে আঁচ করতে পেরে একপর্যায়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়। সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে ফজলুলকে আটক করে। পরে তাকেসহ দুইজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাহিদুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সেনাবাহিনীর সদস্যরা ফজুলল করিম চৌধুরীকে আটক করে থানায় দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউই এখনও লিখিত অভিযোগ দেননি। পরে স্ক্র্যাপ পণ্যের মালিকপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে বললে মুচলেকা দিয়ে তিনি ছাড়া পান।”