কনটেইনার ওঠানামা বিশ্বের শীর্ষ ১০০ সমুদ্রবন্দরের তালিকায় এ বছরও ৬৭তম হয়েছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর। ২০২৩ সালের তালিকাতেও একই অবস্থানে ছিল দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর।
শিপিং বিষয়ক বিশ্বের অন্যতম পুরনো সংবাদমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’ গত ১২ আগস্ট এই তালিকা তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। তালিকায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে চীনের সাংহাই সমুদ্রবন্দর।
তালিকায় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের আগে আছে ভারতের দুটি বন্দর। এর মধ্যে মুন্দ্রা বন্দরেরে অবস্থান ২৪ নম্বরে, আর জহরলাল নেহেরু বন্দর আছে ২৭ নম্বরে।
লয়েডস লিস্ট যে তালিকা প্রকাশ করে তাতে আগের বছরের পণ্য ওঠানামার তথ্য বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ ২০২৩ সালের পণ্য ওঠানামার তথ্য বিবেচনায় নিয়ে ২০২৪ সালের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
লয়েডস লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩ একক কন্টেইনার ওঠানামা করেছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪। এই হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে কন্টেইনার ওঠানামা কমে যায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ। কন্টেইনার ওঠানামা কমলেও তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানের নড়চড় হয়নি, আগের মতো আছে ৬৭ নম্বরে।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্টের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ধারাবাহিকভাবে ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ২৮ ধাপ এগিয়েছিল। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৮৬তম, ২০১৫ সালে ৮৭তম, ২০১৬ সালে ৭৬তম, ২০১৭ সালে ৭১তম, ২০১৮ সালে ৭০তম, ২০১৯ সালে ৬৪তম, ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ছিল ৫৮তম।
২০২১ সালের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের পিছিয়ে ৬৭তম অবস্থানে নেমে যায়। পরের বছরের তালিকায় আবার তিন ধাপ এগিয়ে উঠেছিল ৬৪তম স্থানে। তবে গত বছর আবার তিন ধাপ নেমে ৬৭তম অবস্থানে চলে যায়, যা এবছর প্রকাশিত তালিকাতেও অপরিবর্তিত রয়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি, ঋণপত্র খুলতে ডলার সংকট, দেশের ভেতর ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে গত বছর বাংলাদেশে আমদানি কমেছে। আমদানি কমার প্রভাব দেখা গেছে ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য ওঠানামাও।
লয়েডস লিস্ট বিশ্বের কোন বন্দরে কত কন্টেইনার ওঠানামা হয়েছে সেই তালিকা ধরেই শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকা প্রকাশ করে। এখানে বন্দরে সেবার মান বা দক্ষতা আমলে নেওয়া হয় না। ফলে দক্ষতার দিক থেকে কোন বন্দর এগিয়ে আছে সেটি এই তালিকার মাধ্যমে জানার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এই অবস্থার মধ্যে ৬৭তম স্থান ধরে রাখাটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমরা আশা করছি সেবার মান আরও বাড়িয়ে আগামীতে সামনে এগিয়ে যাব।”