ঢাকাসহ তিন জেলায় রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ১১ ঘণ্টা করে কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার রাতে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে কারফিউ চলবে। তবে এই তিনদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।
দেশের বাকি জেলাগুলোতে কারফিউয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে গত বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জনমনে স্বস্তি না ফেরা পর্যন্ত কারফিউ চলবে।
শনিবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে, স্বাভাবিক হয়ে আসছে। একটা পর্যায়ে জনগণের মধ্যে স্বাভাবিকতা ফিরে আসলে আমরা কারফিউ তুলে নেব।”
শুক্র ও শনিবার ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ৯ ঘণ্টা করে কারফিউ শিথিল রাখা হয়েছিল।
রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানোর পাশাপাশি এই তিনদিনের জন্য অফিস টাইমও বাড়ানো হয়েছে দুই ঘণ্টা করে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা চলবে সরকারি ও বেসরকারি অফিস।
অফিস সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে লেনদেনের সময়ও বাড়ানো হয়েছে। রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। তবে লেনদেন চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত।
স্বাভাবিক সময়ে ব্যাংকে লেনদেন হয় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত, এরপর আরও দুই ঘণ্টা চলে অন্যান্য কার্যক্রম।
রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। স্বাভাবিক সময়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয় সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দিলে বিজিবি নামিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে গত ১৯ জুলাই কারফিউ বা সান্ধ্য আইন জারি করে সারাদেশে সেনা মোতায়েন করে সরকার।
সহিংস আন্দোলনে দেড় শতাধিক মৃত্যুর পর সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত আসে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ক্ষমতাবলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মহানগর এলাকার পুলিশ কমিশনাররা সান্ধ্য আইন জারি করেন।
প্রথম দফায় ১৯ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাত ১২টা থেকে ২০ জুলাই শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটানা কারফিউ চলে। এরপর দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা থেকে ২১ জুলাই রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কারফিউ বহাল ছিল। এরপর দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবার কারফিউ শুরু হয়।
গত সোমবার দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা বিরতি ছিল। এরপর গত মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতি ছিল। গত বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত শুধু ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে কারফিউ অব্যাহত রাখা হয়েছিল। রবিবার থেকে আরও এক জেলা কমিয়ে কারফিউ রাখা হলো ঢাকাসহ তিন জেলায়।