Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ : সাগরে নামতে মানা

পর্যটকদের অনেকে নির্দেশনা না মেনে গোসল করছেন।
পর্যটকদের অনেকে নির্দেশনা না মেনে গোসল করছেন।
[publishpress_authors_box]

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে; বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে কক্সবাজারে। উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট বেশি ঢেউ আছড়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকদের গোসল করতে সাগরে না নামতে মাইকিং করা হচ্ছে।

প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারি আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘনীভূত রূপ নিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টার মধ্যে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে ভারতের পুরি ও সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এসময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার ওসমান গণি বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় বড় বড় ঢেউ তীব্র বেগে উপকূলে আছড়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে সাগরে গোসলে নামা নিরাপদ নয়। এ কারণে পর্যটকদের গোসলে না নামতে লাইফ গার্ড কর্মীদের পাশাপাশি বিচকর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা মাইকিং করছেন। তারপরও পর্যটকদের অনেকে নির্দেশনা না মেনে গোসল করছেন।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে বুধবার গভীররাতে জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নৌবাহিনীর জেটিটি সেখানে বেঁধে রাখা একটি বার্জের ধাক্কায় ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

গত বছর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া করছিল এই জেটি দিয়েই। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকেও এই জেটি দিয়ে দ্বীপে যাতায়াতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল জাহাজ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌমহড়া অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী জেটিটি নির্মাণ করেছিল। দীর্ঘ সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে এই জেটি নির্মাণ করায় পরিবেশবাদীরা শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ফুট পর্যন্ত বেশি হচ্ছে।

তিনি জানান, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সাগরে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞাও চলছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত