Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

শক্তি বাড়িয়েছে রেমাল, এগোনোর গতিও বেড়েছে

remal-satelite-image-260524
[publishpress_authors_box]

উপকূলের কাছাকাছি আসার পর রেমালের শক্তি ও গতি দুটোই বেড়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তখন এতে বাতাসের শক্তি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারের মতো।

বঙ্গোপসাগরে থাকা ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার সকালে ১০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের দিকে এগোচ্ছিল বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল।

তখন ঝড়টি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ছিল।

দুপুর ৩টায় ঝড়টি মোংলা থেকে ২০০ কিলোমিটার এবং পায়রা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ছিল। তাতে বোঝা যাচ্ছে ঝড়টির গতি আগের চেয়ে বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর অধীন জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের ওয়েবসাইটে বিকালে দেওয়া হালনাগাদ তথ্য দেখা যাচ্ছে, রেমাল এখন ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের দেখানো রেমালের গতিপথ।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগও জানিয়েছে, গত ৬ ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রেমালের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ এখন ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ১৩৫ কিলোমিটারে উঠছে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্যও বলছে, বাতাসের এমন শক্তি নিয়েই উপকূলে আঘাত হানতে যাচ্ছে রেমাল।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে এখন বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯২ কিলোমিটারের মতো হলেও এটি যখন আঘাত হানবে, তখন এর বাতাসের তীব্রতা বেড়ে ১০০ কিলোমিটার ছাড়াবে।

আগেই ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল, রেমাল যখন উপকূলে আঘাত হানবে, তখনই এর শক্তি থাকবে সবচেয়ে বেশি।

তবে রেমালের সুপার সাইক্লোন এমনকি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে ওঠার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান সকালে সকাল সন্ধ্যাকে বলেছিলেন, “ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এই গতিবেগের চাইতে বেশি হলে তাকে অতি প্রবল ঘুর্ণিঝড় বলা হয়। রেমাল অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”

অনেক সময় ঘূর্ণিঝড় উপকূলের কাছাকাছি এসে হঠাৎ শক্তি বাড়িয়ে ফেললেও জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার কিংবা ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্যে রেমালের আরও শক্তিশালী হওয়ার কোনও আভাস পাওয়া যায়নি।

ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথও আগের মতোই রয়েছে। এটি সাগর থেকে সরল রেখায় উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া পর্যন্ত এলাকা দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। তখন এর কেন্দ্র থাকবে বাগেরহাটের মোংলায়।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ রেমালের যে গতিচিত্র দেখাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টির মূল আঘাত হবে উপকূলের সাতক্ষীরা, খুলনা এলাকায়।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, উপকূলে আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র থাকবে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তরেখায়। অর্থাৎ ঝড়ের ধাক্কাটি যাবে সাতক্ষীরার ওপর দিয়ে।

ঝড়ের আগে জোয়ারের পানি বেড়েছে সুন্দরবনে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান বলেন, “ঝড়ের ব্যাস বড় হওয়ায় এটি সন্ধ্যার কিছুটা আগে থেকে অথবা কিছুটা পরে অতিক্রম শুরু করে পুরোপুরি উপকূল অতিক্রম করে যেতে রাত হয়ে যাবে।”

উপকূলে উঠে আসার পর বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝড়টি বয়ে যাবে বলে এতদিন আবহাওয়াবিদরা ধারণা দিচ্ছিলেন।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের গতিচিত্রে দেখা যাচ্ছে, রেমাল বাংলাদেশে ঢুকে খুলনা, যশোর, ফরিদপুর হয়ে ঢাকার পশ্চিম দিক দিয়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলের দিকে বয়ে যাবে।

তবে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারে তথ্য বলছে, স্থলভাগে উঠে আসার পর রেমালের গতিপথ যাবে বেঁকে। এটি যশোর থেকে ডানে বেঁকে ফরিদপুর, ঢাকার উপর দিয়ে সিলেটের দিকে যাবে।

ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে ওঠার পর ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে, তবে তখন ঝরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টি। ফলে রেমাল যে পথ ধরে যাবে, সেই সব এলাকায় বৃষ্টি হবে বেশি।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান বলেন, রেমালের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ইতোমধ্যেই ঝড়ো হাওয়া হচ্ছে। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনাসহ বেশ কিছু জেলার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত