কারণ দর্শানোর নোটিস ছাড়াই বেসরকারি ডিবিসি নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদক নঈম তারিকসহ তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে মানবন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের এক অংশ।
নঈম তারিক ছাড়া অন্য দুজন হলেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কাওসারা চৌধুরী কুমু ও মাছুদুর রহমান।
ডিবিসি নিউজ পরিবারের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে অংশ নেন ডিবিসির সংবাদকর্মীদের একাংশ, যারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন ‘মুক্ত সাংবাদিকতার পক্ষের’ হিসেবে। কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক কর্মীরাও।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও ডিবিসির সিইও এম মঞ্জুরুল ইসলামসহ তার সহযোগীদের অপসারণ না করলে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বর্তমান কর্মীরা। দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
মানববন্ধনে এক সাংবাদিক বলেন, “ডিবিসি নিউজের বার্তা বিভাগে শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে একমাত্র নঈম তারিকই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। এর আগে চাকরিচ্যুত যুগ্ম বার্তা সম্পাদক নাদিম, সাংবাদিক কুমু ও মাছুদুর আওয়ামী দুঃশাসনের বিপক্ষে সবসময় সোচ্চার ছিলেন।”
এসময় ডিবিসির সিইও এম মঞ্জুরুল ইসলামকে ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবেও আখ্যা দেন কয়েকজন।
তারা বলেন, মঞ্জুরুলের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায়ও অভিযুক্ত। পলাতক মঞ্জুরুল ইসলামকে খুঁজে বের করে তার বিচারের দাবিও জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
অন্তর্বর্তী সরকার এখনও কেন ফ্যাসিবাদের দোসর মালিক ও তার নির্বাহীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না, সে প্রশ্নও তোলেন বিক্ষোভরত সংবাদকর্মীরা।
ডিবিসি নিউজ থেকে চার সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চার সাংবাদিককে নিজ নিজ পদে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে, আগামী বুধবার ডিবিসি কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। রোজকার ঘটনার পাশাপাশি নারী, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, খেলা, আন্তর্জাতিক সংবাদসহ বিভিন্ন ধরনের খবর ও আলোচনা অনুষ্ঠান প্রচার হয় চ্যানেলটিতে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। যার মধ্যে ছিল ডিবিসির কার্যালয়ও। সেদিন সন্ধ্যার দিকে কার্যালয়টি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়, লাথি মেরে মূল ফটক ভাঙারও চেষ্টা করে একদল দুর্বৃত্ত। তবে এসময় কেউ হতাহত হয়নি।
ওই দিনের পর প্রতিষ্ঠানটির ভেতরেও বেশ অস্থিরতা তৈরি হয়। যার রেশ ধরে বেশ কিছু পদে রদবদলও আনে কর্তৃপক্ষ।