বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে পণ্য আমদানি করতে যুক্তরাজ্যকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৯৪ শতাংশই তৈরি পোশাক নির্ভর, যার পরিমাণ ৫ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে সম্ভাবনাময় খাতগুলোর দিকেও নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনটি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে ডিসিসিআইয়ের দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় সভায় সংগঠনের সভাপতি আশরাফ আহমেদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪১৫ দশমিক ৩২ মিলিয়ন এবং ৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ৩য় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল যুক্তরাজ্যের বাজার। এছাড়া সেদেশের উদ্যেক্তাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার।
ফাইন্যান্স, স্বাস্থ্যসেবা, ফিনটেক, বিপিও, বিপিএস, পর্যটন এবং শিক্ষাখাতে দুদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরে সরকারি পর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণেরও দাবি জানান আশরাফ আহমেদ। বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রাধিকার বিষয়গুলো যেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রাধিকার পায়, সেদিকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক বিনিয়োগ যত সম্প্রসারিত হবে, দুদেশের বেসরকারিখাতের মধ্যে সমন্বয় তত বৃদ্ধি পাবে।
আয়োজনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, অর্থনৈতিক ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে যুক্তরাজ্য অত্যন্ত আগ্রহী। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তার দেশ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তবে এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের বহুমূখীকরণের কোনও বিকল্প নেই।
হাইকমিশনার আরো বলেন, কৃষি, সি-ফুড, চামড়াজাত পণ্য এবং হালকা-প্রকৌশল বিশেষ করে বাইসাইকেল ইত্যাদি পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে রপ্তানির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখায় বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সংশ্লিষ্ট নীতি সহায়তা ও নীতির ধারাবাহিকতা একান্ত অপরিহার্য, সেই সঙ্গে পণ্যের মেধাসত্ত্ব সুরক্ষা, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যকর ব্যবহার ও ব্যবসায়িক মুনাফা প্রত্যাবর্তন প্রভৃতি বিষয়ে বাংলাদেশকে আরও মনোযোগী হওয়ার কথা বলেন তিনি।