Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার অভিযান

পুলিশ দেখে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মৃত্যু

ss-dolon dhar-4-7-24
[publishpress_authors_box]

কক্সবাজারের টেকনাফে খাল থেকে বৃদ্ধার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি ছৈয়দ হোসেন মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধারও করেছে পুলিশ। অভিযানের সময় পুলিশের ভয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সেসব স্বর্ণালংকার কেনা জুয়েলার্সের মালিক দোলন ধর।

নিহত দোলন ধর (৩২) রামু উপজেলার রাজারকুল এলাকার সোনারাম ধরের ছেলে। টেকনাফ বাজারের চাম্পা জুয়েলার্সের মালিক তিনি।

গ্রেপ্তার ছৈয়দ হোসেন মামুন টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের রুহুল্যার ডেবা এলাকার হোসেন আহমদের ছেলে।

বুধবার রাতে মামুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর বৃহস্পতিবার সকালে চকরিয়ার হাসপাতালে মারা যান জুয়েলার্সের মালিক দোলন।

গত ১ জুলাই দিবাগত রাতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের রুহুল্যার ডেবা এলাকার খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় জাহেদা খাতুনের (৮২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি গ্রামের বাসিন্দা ছৈয়দ আহমদের স্ত্রী।

টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, এ ঘটনায় করা মামলার সূত্র ধরে পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি মাইমুনা আক্তার, হাফেজ মিয়া, আব্দুল মোতালেব নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। তাদের দেওয়া তথ্যেরে সূত্র ধরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি ছৈয়দ হোসেন মামুনকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করে। বুধবার মধ্যরাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়া এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর মামুন স্বীকার করেন, তার স্ত্রী মাইমুনা এবং সহযোগীরা মিলে বৃদ্ধা জাহেরা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বর্ণালংকার লুট করে। এরপর লাশ বস্তাবন্দি করে খালে ফেলে দেয়। লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার টেকনাফের লামা বাজারের অংছিং মার্কেটের চাম্পা জুয়েলার্সে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করে দেয় তারা।

তাদের দেওয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই স্বর্ণালংকার উদ্ধারে যায় পুলিশ। পুলিশ চাম্পা জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে বৃদ্ধার ১ ভরি ৭ আনার মতো স্বর্ণ উদ্ধার করে।

তবে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার অভিযানে যাওয়া পুলিশের ভয়ে ৪ তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হন চাম্পা জুয়েলার্সের মালিক দোলন ধর। চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দোলন ধর নামে এক যুবককে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এখানকার জরুরি বিভাগে আনা হয়। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি বলেন, “টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা প্রতিবেদন এবং নিহতের শরীরের আঘাতের ধরণ দেখে বলা যায়, দোলন ধর উঁচু কোনও স্থান থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।”

টেকনাফ থানার ওসি আরও জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর দোলন ধরের মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেছে। আসামির দেওয়া তথ্যে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার অভিযানে চাম্পা জুয়েলার্সে যায় পুলিশ। এই সময় জুয়েলার্স সমিতির নেতারা সঙ্গে ছিলেন। অভিযানে দোলনের ভাই রতন ধর এসব সোনা কেনার কথা স্বীকার করে পুলিশকে সহযোগিতা করেন। তিনি সে সোনা ফিরিয়েও দেন।

ওসি বলেন, “এর মধ্যে পুলিশের অজান্তে দোলন ছাদে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ছাদ থেকে লাফ দেয়। এতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত