সারাদেশেই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এরই মধ্যে নতুন নতুন মৃত্যুর খবর আসছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই বন্যায় দেশের ১১ জেলায় ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের বন্যা পরিস্থিতির সবশেষ অবস্থা জানান অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। দুর্গত জেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৭১ জন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সম্প্রতি ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার জেলা বন্যার কবলে পড়ে। আকস্মিক এই বন্যায় ভেসে যায় বহু ঘরবাড়ি, গাছপালা, গবাদিবশু। সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েন লাখো মানুষ।
বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ চলছে। সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণও মজুদ রয়েছে।
এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও কক্সবাজার জেলার পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এছাড়া মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে এবং ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসানও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ২৪ হাজার ২০২ জন। এদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা মোট ৭১ জন। যারমধ্যে পুরুষ ৪৫, নারী সাত জন ও শিশু ১৯ জন। জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যা কুমিল্লায় ১৯, ফেনীতে ২৮, চট্টগ্রামে ছয়, খাগড়াছড়িতে এক, নোয়াখালীতে ১১, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় এক, লক্ষ্মীপুরে এক, মৌলভীবাজারে এক ও কক্সবাজারে তিন জন। এছাড়া, মৌলভীবাজারে এক জন নিখোঁজ রয়েছে।
বর্তমানে ৫ লাখ ৮২ হাজার ১৫৫টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।