দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে জাতীয় পার্টি। ভোটে জয় না পেলেও সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছেন দলটির দুজন নেতা। যাদের একজন কেবল পরাজিতই হননি, বিজয়ী প্রার্থীর তুলনায় বিপুল ভোট কম পেয়ে জামানতও হারিয়েছেন।
এরা হলেন ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী সালমা ইসলাম ও ঠাকুরগাও-২ আসনের নুরুন নাহার।
বৃহস্পতিবার বিকালে দলের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এই মনোনয়নের কথা। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নবম সংসদে সংরক্ষিত চারটি নারী আসন ভাগে পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। দশম সংসদে তা বেড়ে দাঁড়ায় ছয়টিতে, একাদশে কমে হয় চারটি।
এবারের নির্বাচনে গোটা জাতীয় পার্টিই এক ধরনের ভরাডুবির মধ্যে পড়েছে। সেখানে সংরক্ষিত আসন পেয়েছে মাত্র দুটি। সেই দুইজন বেছে নিতে আওয়ামী লীগের মতো ভোটে পরাজিত প্রার্থীদেরই পছন্দ করল দলটি।
এই দুজনের মধ্যে সালমা রহমান নির্বাচন করেছিলেন নৌকার প্রার্থী সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে। সালমানের ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৭১ ভোটের বিপরীতে সালমা পেয়েছিলেন মাত্র ৩৪ হাজার ৭৪৬ ভোট।
অন্যদিকে নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী জামানত বাতিল হয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরুন নাহার বেগমের। তিনি পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৯৮৬ ভোট। যেখানে তার প্রতিদ্বন্ধী নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত মাজহারুল ইসলাম সুজন পান ১ লাখ ১৫ হাজার ৪১৬ ভোট।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পদপ্রার্থীরা মনোনয়পত্র দাখিল করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি।
বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ২২ ফেব্রুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। ভোটগ্রহণ হবে ১৪ই মার্চ। সেদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সংসদে ভোটগ্রহণ চলবে, যদি প্রয়োজন হয়।
গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ১১ আসনে জয় পায় জাতীয় পার্টি। এছাড়া আওয়ামী লীগ ২২৩টি, ১৪ দলীয় শরিক জাসদ একটি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, স্বতন্ত্র ৬২ জন, কল্যাণ পার্টি একটি আসন পায়।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৮টি, জাতীয় পার্টি দুটি ও স্বতন্ত্ররা ১০টি আসন পায়। কিন্তু স্বতন্ত্র ৬২ প্রার্থী আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেওয়ায় আওয়ামী লীগই ৪৮টি আসন পাচ্ছে।