শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটানোর আন্দোলনকারী শক্তিগুলোর মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের সমর্থনে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবিধানিক শূন্যতা এড়ানোর পদক্ষেপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে এই দাবি করেন জোটের সমন্বয়ক ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম।
তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুণ্থানের মধ্যে দিয়ে হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত হয়েছে। এ লড়াইয়ে অসংখ্য ছাত্র-জনতা শহীদি আত্মদান করেছে। আমরা শহীদদের আত্মদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমরা শহীদদের রক্তের নামে শপথ পরছি, শোষণ- বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করব।”
জনগণের আন্দোলনের এই বিজয় নস্যাৎ হওয়া ঠেকাতে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে রাগীব নাইম বলেন, “আমরা কোনোভাবেই সেনা সমর্থিত শাসন মানব না। সেনাশাসনে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ভূলন্ঠিত হয়।
“আমরা চাই, আন্দোলনের সাথে যুক্ত শক্তিসমূহের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সমন্বয়ে একটি ‘অন্তর্বর্তীকালীন গণতান্ত্রিক সরকার’ গঠন করতে হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তারাই থাকবেন, যারা এই আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।”
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করে সবাইকে মুক্ত করা, সব হত্যার তদন্ত ও বিচার, হত্যার নির্দেশদাতা এবং হত্যার সাথে জড়িত সরকারের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বিচার, নিহদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের দাবি জানানো হয়।
সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-প্রক্টরদের অপসারণ দাবি করেছে ছাত্রজোট।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাগীব নাঈম বলেন, “আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আমরা দেখছি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বাড়ি-দোকানপাট- উপাসনালয়, থানাসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে।
“এপরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় স্থাপনাসহ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বাড়ি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা রুখে দাঁড়াতে সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।”
সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে সাম্প্রদায়িক শক্তির অংশগ্রহণ ছাত্র-জনতার অভ্যুণ্থানের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা এবং বিপ্লবী ছাত্র- যুব আন্দোলনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) তাওফিকা প্রিয়া।