Beta
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

অবশেষে ২২ শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে, বাজারে বড় দরপতন

ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২২টি কোম্পানির শেয়ারকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর এর ফলে বাজারে বড় দরপতন হয়েছে।

সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার তালিকাভুক্ত ২২ কোম্পানির শেয়ারকে আগের ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে অবনমন করে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।

এ কারণে সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতে এসব শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হয়। অন্তত ১৯টি কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হতে দেখা যায়।

লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টা শেষে বেলা ১১টায়ও এসব শেয়ারের অন্তত ১১টিকে এমন দরে কেনাবেচা হতে দেখা যায়, যেখানে বিপুল সংখ্যক শেয়ারের বিক্রির আদেশের বিপরীতে ক্রেতাশূন্য অবস্থাও দেখা যায়।

নানা নাটকীয়তা ও বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর এ পরির্বতন করা হলো। এ নিয়ে এখনও বির্তক ও সমালোচনার ঝড় বইছে।

দুই দফায় পরিবর্তনের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন  (বিএসইসি) যে আদেশ দিয়েছিল, তার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।

যেসব শেয়ারকে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমন করা হয়েছে সেগুলো হলো- অলটেক্স, আরামিট সিমেন্ট, আজিজ পাইপস, ডেল্টা স্পিনার্স, এফএএস ফাইন্যান্স, জিবিবি পাওয়ার, ইনটেক অনলাইন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, কেয়া কসমেটিক্স, খুলনা প্রিন্টিং, ন্যাশনাল টি, প্রিমিয়ার লিজিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, রিং শাইন, সাফকো স্পিনিং, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ঢাকা ডাইং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, উত্তরা ফাইন্যান্স, ইয়াকিন পলিমার ও জাহিনটেক্স।

নির্ধারিত সময়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা অথবা টানা ছয় মাসের বেশি সময় কোম্পানির উৎপাদন বা ব্যবসা বন্ধ থাকা অথবা পুঞ্জীভূত লোকসান সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো এক বা একাধিক কারণে এসব কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে।

তালিকাভুক্ত কোনও কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের নিয়মিত লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলেও সে কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার বিএসইসির আদেশে পর পর দুই বছর লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণেও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অবিলম্বে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমনের নির্দেশনা ছিল।

তবে লভ্যাংশ ইস্যুতে কোনও কোম্পানিকে এখনই জেড ক্যাটাগরিভুক্ত করার অনুমতি দেয়নি বিএসইসি।

একই আদেশের খণ্ডিত অংশ অনুসরণের অনুমতি দেওয়া হলেও কেন বাকি ক্ষেত্রে অনুমতি দেয়নি— সে প্রশ্নের উত্তর বিএসইসি থেকে মেলেনি।

দেশের পুঁজিবাজারে জেড ক্যাটাগরি হিসেবে চিহ্নিত শেয়ারগুলোকে মূলত জাঙ্ক বা মন্দ মানের শেয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তালিকাভুক্ত কোম্পানি নিয়মিত এজিএম করলে এবং সবশেষ এজিএমের মাধ্যমে কমপক্ষে ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দিয়েছে, সেগুলোকে ‘এ’ ক্যাটাগরি শেয়ার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেগুলো সর্বশেষ ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দিয়েছে, সেগুলোকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সূচক কমেছে দুই বাজারেই

সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার ‘জেড’ ক্যাটাগরির সব শেয়ারের দরপতনের কারণে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৩ দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৮৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট কমে নেমেছে ১ হাজার ৩৬৮ দশমিক ৮২ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ২৭ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে নেমেছে ২ হাজার ১২৯ দশমিক ২৮ পয়েন্টে।

রবিবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩৯২টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির দর।

লেনদেনও বেশ খানিকটা কমেছে। রবিবার ডিএসইতে ৯২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক হাজার ৭৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

আরেক বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২০৪ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৮৫ দশমিক ৮২ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ১৬৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দর। ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত