Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫

ভ্যাট হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার প্রস্তাব ঢাকা চেম্বারের

এনবিআর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী সমাজ একমত থাকলে সরকার ভ্যাট হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেবে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
এনবিআর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী সমাজ একমত থাকলে সরকার ভ্যাট হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেবে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

কয়েক স্তরের ভ্যাট জটিলতা সৃষ্টি করছে জানিয়ে তা একক হারে ও এক অঙ্কে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এই প্রস্তাব দিয়েছেন বাণিজ্য সংগঠনটির সভাপতি মো. তাসকীন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী সমাজ একমত থাকলে সরকার ভ্যাট হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেবে।

রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবন সম্মেলন কক্ষে এ প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও মো. সালিম সোলায়মানসহ সংশ্লিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, “বর্তমানে দেশের সাধারণ (স্ট্যান্ডার্ড) ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ। কিন্তু তা কয়েকটি স্তরে কমিয়ে ১০, সাড়ে ৭ এবং ৫ শতাংশ হারে নির্ধারণের ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য জটিলতা সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে বিরোধ তৈরি হচ্ছে।

“আবার কর রেয়াতের সুবিধা সবক্ষেত্রে নিশ্চিত না হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীকে বাড়তি করের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে ভ্যাটের হার সিঙ্গেল ডিজিট নির্ধারণের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ১% হারে নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

এনবিআর এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে সামগ্রিক কর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আসার পাশাপাশি ব্যবসার পরিচালন ব্যয় কমবে এবং উৎপাদন খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ডিসিসিআই।

অনুষ্ঠানে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য ঢাকা চেম্বারের ৪২টি প্রস্তাব এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে পেশ করেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ।

ডিসিসিআইর এসব প্রস্তাবে করের আওতা বৃদ্ধি ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ, কর হার কমানো, ব্যবসাবান্ধব করনীতি ও অটোমেশন ব্যবস্থা চালু, ভ্যাট ব্যবস্থার সংস্কার, স্থানীয় শিল্প ও উৎপাদন খাতের সুরক্ষা, আমদানি শুল্ক ও ট্যারিফ ব্যবস্থা সহজীকরণ এবং ব্যক্তি শ্রেণির কর কাঠামো সহজীকরণে জোর দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি করদাতার হার বৃদ্ধি এবং করজাল সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এনবিআরকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব দেন। এছাড়া কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজে অনলাইনে কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে স্বয়ংক্রিয় কর রিটার্ন পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব দেন তিনি।

বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণের আহ্বানও জানান ডিসিসিআই সভাপতি।

এছাড়া বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে পণ্য আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ থেকে ধাপে ধাপে কমানোর এবং আমদানি পর্যায়ে উৎপাদনকারীদের জন্য বিদ্যমান অগ্রিম কর বিলুপ্তির প্রস্তাব করেন তিনি।

ব্যবসায়ীরা কাস্টমস নির্ধারিত ট্যারিফ ভ্যালুর পরিবর্তে নির্দিষ্ট হারে শুল্ক আরোপ চান জানিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, “ট্যারিফ মূল্য ও বাজার মূল্যের মধ্যে পার্থক্য থাকায় ব্যবসায়ীদের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বেশি শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর ফলে ব্যবসায় ব্যয় বৃদ্ধি করছে এবং আমদানি প্রক্রিয়াকে জটিল ও ব্যয়বহুল করে তুলছে।”

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট রাজস্ব নীতিমালার সমন্বয়ে সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে এনবিআর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

তিনি বলেন, “দেশের ব্যবসায়ী সমাজ একমত পোষণ করলে, ভ্যাটের বিভিন্ন স্তর বহাল না রেখে সরকার ভ্যাট হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে আগ্রহী। তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের স্বদিচ্ছা ও স্বচ্ছতা দরকার।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত