রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকার মেট্রোরেল। এরমধ্যে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ধর্মঘট শুরু করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএলের ৭০০’র বেশি কর্মচারী।
জাতীয় গ্রেডভিত্তিক বেতন-ভাতা বৈষম্য দূরী করাসহ ৬ দফা দাবি মানা না পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শনিবার ডিএমটিসিএল’র ১০ম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যায়ের কর্মচারীরা ঢাকার উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিকেট মেশিন অপারেটর ইয়াসমিন আক্তার তাদের বেতন বৈষম্য দূরে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো
১. বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী ১-৯ম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেলের ২ দশমিক ৩ গুণ হারে এবং ১০-২০তম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেলের ২ গুণ হারে প্রদান করা হচ্ছে; যা পরিবর্তন করে বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো। অর্থাৎ, সকল গ্রেডের একই রকম বেতন কাঠামো যা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫–এর ২ দশমিক ৩ গুণ হারে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ দিতে হবে।
২. চাকরিতে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ সিপিএফ সুবিধা দিতে হবে।
৩. অন্য সব সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ও অন্যান্য দেশের মেট্রোর সঙ্গে সমন্বয় করে পদোন্নতি ব্যবস্থা চালুসহ সব ধরনের ভাতা সংবলিত সার্ভিস রুলস দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে হবে।
৪. শিক্ষানবিশকাল শেষে অন্য সব সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির মতো যোগদানের তারিখ হতে স্থায়ীকরণ (নিয়মিতকরণ) করতে হবে।
৫. স্টেশন, ডিপোসহ সব স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. কর্মক্ষেত্রে স্বৈরাচারী মনোভাব ও বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো বন্ধ করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমটিসিএলের স্টেশন কন্ট্রোলার বলেন, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস বারবার দিয়েছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক ধর্মঘট চলবে।
রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উত্তরা ডিপোর সামনে সমাবেশের ঘোষণাও দেন তারা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংসতার মধ্যে মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয় গত ১৯ জুলাই। তারপর থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে আন্দোলন আরও তীব্র আকার নেওয়ায় গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিলেও মেট্রোরেল চলাচলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।