রমজানের দুই থেকে তিন মাস আগে থেকেই ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে। আবার রোজা রেখে নিয়মিত রক্তের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা অনেক জরুরি। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত তিনবার তা মাপা উচিৎ।
৯ মার্চ বিকালে ডিএমসির মিলন অডিটোরিয়ামে ‘রমজানে ডায়াবেটিস ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে একথা বলেন বক্তারা।
সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, “আমরা ভালো চিকিৎসা চাই না, রোগ প্রতিরোধ চাই। রোগ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ করার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যখাতের সফলতা অর্জন করা সম্ভব।”
হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সার্বিক সহযোগিতায় ডিএমসির এন্ডোক্রাইন বিভাগ ও শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে চিকিৎসকদের জন্য নির্দেশনামূলক এ সেমিনারের আয়োজন হয়।
শফিকুল আলম চৌধুরী আরও বলেন, “জাঙ্ক ফুড পরিহার করে সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর রমজান মাস আমাদের জন্য অনেকটা আর্শীবাদের মতো। কারণ রোজা রাখলে প্রায় ত্রিশ শতাংশ ওজন কমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, উচ্চ রক্তচাপ দূরে থাকার মতো অনেক ধরনের উপকার রয়েছে।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ প্রসাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মোবারক হোসেন।
ডিএমসির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো আসাদুজ্জামান বলেন, “রমজান মাসকে কেন্দ্র করে দেশে মসজিদকেন্দ্রিক ডায়াবেটিস সচেতনতামূলক আয়োজন রাখা উচিত, তাতে সচেতনতা কার্যক্রম আরও কার্যকর হবে।
“পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেটের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের কার্বোহাইড্রেট নির্ভরশীলতা কমাতে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতাও খুবই প্রয়োজন।”
রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যায় না বলে যে কথা চালু রয়েছে সেটা ভ্রান্ত ধারণা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রোজা রেখেও রক্ত পরীক্ষা করা যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের যে সকল ভুল ধারণা আছে, তার সংশোধন জরুরি। এমনকি রোজা রেখে সাবকিউটেনাস ইনজেকশন কিংবা ইনসুলিনের ইনজেকশন নিলেও রোজার কোনও ক্ষতি হবে না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই জানে না যে তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে। তথ্যমতে, এদেশে প্রায় ২ কোটি বা প্রতি ১৪ জনে ১ জন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এখন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে, পাওয়া যাচ্ছে সব বয়সের ডায়াবেটিস রোগী।