Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

ডিপ্লোমাদের বিএসসি সমমানে আপত্তি স্নাতক প্রকৌশলীদের

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি)।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি)।
[publishpress_authors_box]

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উদ্যোগ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মাঝে খুশির বার্তা ছড়ালেও তা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের প্রকৌশলীদের মধ্যে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মধ্যে যারা কেউ দুই বছর বা তার বেশি সময়ে কোনও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, তাদের বিএসসি (পাস) মর্যাদা দেওয়ার কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়।

বিষয়টির সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখে সুপারিশ প্রণয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ একটি কমিটি গঠন করেছে।

গত ২ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এক অনুষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসি (পাস) মর্যাদা দেওয়ার পক্ষে মত জানিয়েছিলেন।

তার ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল কমিটি গঠন করার পর থেকে প্রকৌশলীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা এই পদক্ষেপে খুশি হলেও স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা বলছেন, এমন পদক্ষেপ প্রকৌশল শিক্ষায় জটিলতা বাড়বে।

কী বলেছিলেন মন্ত্রী

ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে গত ২ মার্চ সংগঠনটির জেলা ও সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সম্মেলন ও বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নওফেল। সেখানেই তিনি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক সংকট মেটাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তিনি বলেন, “শিক্ষক সংকট নিরসনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাজে লাগাতে এবং বর্তমান কারিকুলামে যে শিক্ষা দর্শন, অ্যক্টিভিটি বেইজড লার্নিং, সেখানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে আসতে পারেন।

“আমরা মনে করছি, ৬০ হাজারের মতো গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের অভাব রয়েছে। সেখানে আমাদের ডিপ্লোমা পাস করা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োজিত করতে পারলে শিক্ষক সংকট সমাধান করা সম্ভব হবে। সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে।”

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সদের স্নাতক মর্যাদা দেওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “একজন এসএসসি পাস শিক্ষার্থীর বিএসসি (পাস কোর্স) পাস করতে সময় লাগে ৫ বছর। অন্যদিকে ডিপ্লোমা পাস করতে সময় লাগে ৪ বছর। সেক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পাস করা একজন শিক্ষার্থী এক বছর কোনও সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তাকে বিএসসি (পাস) সমমানের মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। সে বিষয়ে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরদিন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অভিভাবক সংগঠন আইডিইবি একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়ারদের বিএসসি সমমান দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই গত ১৫ এপ্রিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপন আসে। সেখানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসি পাস সমমান মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় মতামত ও সুপারিশ তৈরি করতে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ‘চাওয়ায়’ কমিটি গঠন

আইডিইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (হেডকোয়ার্টার্স) মো. ফজলুর রহমান খান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এটা আমাদের দীর্ঘদিনের একটা দাবি ছিল। আমরা এসএসসি পাসের পর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ৪ বছরের শিক্ষাক্রম সম্পন্ন করেছি। কিন্তু এটাকে অনেকে বলে ইন্টার সমমান, কেউ বলে ডিগ্রি সমমান।  

“যেহেতু আমরা পলিটেকনিক গ্র‌্যাজুয়েট, সেহেতু আমরা বলেছি এটাকে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে তুলনা করে একটা নির্দিষ্ট সনদ দেওয়া হোক। সম্প্রতি আমাদের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তখন তার কাছেও আমরা এ বিষয়ে দাবি তুলেছিলাম। তখন তিনি এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেটার আলোকেই মূলত এই কমিটিটা হয়েছে।”

স্নাতক প্রকৌশলীদের আপত্তি যেখানে

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কমিটি গঠনের পর থেকে সোশাল মিডিয়ায় প্রকৌশলীদের বিভিন্ন গ্রুপে তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

বুধবার দেওয়া এক ফেইসবুক পোস্টে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী শফিকুল বিদ্যুৎ লিখেছেন, “দেশে কি বিএসসি পাস ও বিএসসি অনার্স এর সংখ্যা কমে গেছে? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাস ও অনার্স করা লক্ষ লক্ষ বেকার রয়েছে। তাদেরকে নিয়োগ না দিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিএসসি অটো পাস দেখিয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া অনুচিত।

“হিতে বিপরীত হতে পারে। যার যে কাজ তাতে তাকেই মানায়। বিদ্যমান পলিটেকনিকগুলোতে অনেক শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সেখানে নিয়োগ দিন। ষষ্ঠ শ্রেণি বা এর সমমান থেকে দ্বাদশ বা সমমান শ্রেণি পর্যন্ত দেশের প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শ্রেণিতেই কারিগরি কোর্স চালু করে সেখানে এই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সরাসরি নিয়োগ দিন।”

আদনান ইবনে মঈন নামে এক প্রকৌশলী এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করে ফেইসবুকে লিখেছেন, “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দুই বছরের অভিজ্ঞতায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমমান দেওয়াটা জোস একটা আইডিয়া। অবশ্যই সাধুবাদ জানানোর মত। তবে শুধু এটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বত্র। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দুই বছরের অভিজ্ঞতায় এমএসসি সমমান। আরো পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতায় ডক্টরেট দিলে কেমন হয়??

“বিবিএ করে দুই-তিন বছরের অভিজ্ঞতায় এমবিএ সমমান দেওয়া যেতে পারে। ওয়ার্ড বয়দের অভিজ্ঞতায় নার্স। নার্সদের দুই বছরের অভিজ্ঞতায় ডাক্তার সমমান। কি জোস একটা ব্যাপার স্যাপার। এসএসসি পাস করে দুই বছর কোনও একটা জব করলে কি এইচএসসি সমমান হতে পারবে?? আরও ভালো হয় একদম প্লে গ্রুপ থেকে শুরু করলে। প্লে তে এক বছর পরে দুই বছর রেস্ট নিলে থ্রি তে উঠায় দিল। কী অসাধারণ হবে আমাদের এই বাংলাদেশ!”

মামুনুর রশিদ জুয়েল নামে এক প্রকৌশলী কাজের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ দেওয়ার জটিলতার দিকটি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “কোনও নার্স কয়েক বছর চাকরি করলে তাকে কি চিকিৎসক বলা যাবে? তাহলে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কীসের ভিত্তিতে এই সুবিধা দেওয়া হবে?

“আমার মনে হয়, এভাবে কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসি সমমান দেওয়া হলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের যোগ্যতাকে খাটো করা হবে।”

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান তাদের আপত্তি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা কোনওভাবেই ঠিক হবে না। কারণ হলো একজনের কাজের অভিজ্ঞতার কারণে তাকে শিক্ষাগত সন্মান দেওয়া যায় না। এমন হলে আরও অনেক পেশায় অভিজ্ঞ লোক আছেন, তারা যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা চায়, তখন কী করবেন?

“এমন সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে কেন নেওয়া হলো, তা জানি না। এ বিষয়ে আলোচনা করতে আমাদের একটি মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে আমরা সবাই মতামত দেব। এরপর দেখা যাক কী হয়!”

ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইডিবি)।

ভুল বোঝা হচ্ছে, দাবি ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কমিটি গঠনের পর থেকে সোশাল মিডিয়ায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরাও লিখছেন। তারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।

এই প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়ে সরদার আরিফ নামে একজন ‘Diploma Engineers – ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স’ নামে ৩২ হাজারের বেশি সদস্যের একটি ফেইসবুক গ্রুপে লিখেছেন, “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংকে ডিগ্রি সমমান দেওয়া হবে, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমমান নয়। ফলে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে ডিগ্রি সমমানের পদে আবেদনের সুযোগ পাবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণ। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পদে পারবে না।

“প্রাইমারি, হাইস্কুলসহ সরকারি বিভিন্ন নিয়োগে, যেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি চাওয়া হয়, সেখানে আবেদনের সুযোগ পাবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণ।”

জাকারিয়া আহমেদ নামে একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক হিসেবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দিতে চায় সরকার। সে লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।

“এটা নিয়ে বিরোধিতা কেন, আমি বুঝতে পারছি না। বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা শুধু আমাদের সঙ্গেই বিরোধিতা করতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই আমরা তাদের শত্রু নই। ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবার (ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী) এক হয়ে কাজ করতে হবে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি মনে করি, সেটা পরবর্তী শিল্প বিপ্লবের জন্য খুবই জরুরি।”

ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এ বিষয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা একটু ভুল বুঝছেন। আমরা তো বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারের সমমানের কথা বলিনি। আমরা বিএ পাস বা বিএসসি পাস সাটিফিকেটের সমামানের মর্যাদা চেয়েছি।

“আমরা ১৪ বছরের শিক্ষাজীবন শেষ করেছি, আর বিএ পাসের জন্য লাগে ১৫ বছর। সেক্ষেত্রে আমাদের ১ বছর প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা আলোকে বিএ পাসের সমমান চেয়েছি। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে আরও এক বছর বাড়িয়ে সেটিকে ২ বছর করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের বিরোধের কোনও কারণ নেই, কিংবা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের সমমান হওয়ারও সুযোগ নেই। তাই আমার মনে হয়, বিষয়টি পুরোপুরি না বুঝে কোনও কারণ ছাড়াই এই বিষয়ের বিরোধিতা করা হচ্ছে।”

কর্তৃপক্ষ যা বলছে

প্রকৌশলীদের দুই পক্ষের টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ অবস্থা কী, সকাল সন্ধ্যা তা জানতে চেয়েছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি) মো. নজরুল ইসলামের কাছে।

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে গঠিত কমিটির কোনও মিটিং হয়নি এখনও। খুব শিগগিরই মিটিং করে কীভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা যেতে পারে, সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।”

স্নাতক ডিগ্রিধারীদের বিরোধিতা নিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের বিরোধিতার কোনও কারণ নেই। কারণ আমরা তো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারের সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলিনি, বিএসসি পাস সার্টিফিকেটের কথা বলেছি। দুটো বিষয় তো এক নয়।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত