কয়েকটি কর বর্ষের আয়করের দ্বিতীয় মূল্যায়ন বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দাবি করা ৬০০ কোটি টাকা না দিতে গ্রামীণ কল্যাণের করা দুটি রিট আবেদন পুনঃশুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আগামী তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণ নামের এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা।
আদালতে এনবিআরের আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলী। গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও সরদার জিন্নাত আলী।
মামলার নথি অনুযায়ী, আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১২০ ধারা অনুসারে ৬০০ কোটি টাকা দাবি করে গ্রামীণ কল্যাণের নথি পুর্নমূল্যায়ন চায় এনবিআর। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আসে গ্রামীণ কল্যাণ। ট্রাইব্যুনাল তাদের আবেদনটি খারিজ করে দেয়। এরপর তারা আপিল না করার অঙ্গীকার করে রিভিউ আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাদের রিভিউও খারিজ করে দেয়।
এরপর গ্রামীণ কল্যাণ হাইকোর্টে দুটি রিট আদেন করে। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রিভিউ খারিজাদেশ বাতিল করে গ্রামীণ কল্যাণকে আপিল দায়ের করতে নির্দেশ দেয়।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় এনবিআর। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টকে পুনঃশুনানি করে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
আদেশের পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “তারা (গ্রামীণ কল্যাণ) আপিল না করার অঙ্গীকার করেই রিভিউ আবেদন করেছে। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট তাদেরকে আপিল করতে যে নির্দেশ দিয়েছে সেটি পুনঃশুনানি করতে বলেছে আপিল বিভাগ।”
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলী জানান, ২০১১ থেকে ২০১৬-১৭ পর্যন্ত কর বর্ষে গ্রামীণ কল্যাণের আয়কর দ্বিতীয় মূল্যায়ন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় মূল্যায়নের বিরুদ্ধে আপিল ও রিভিউ আবেদন করা যায়। তবে রিভিউ আবেদন করা হলে আপিল করা হবে না বলে অঙ্গীকার করতে হয়।
তিনি বলেন, এখানে গ্রামীণ কল্যাণ আপিল না করে রিভিউ আবেদন করে। ওই রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর রিভিউ আবেদন খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে দুটি রিট আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রিভিউ খারিজের আদেশ বাতিল করে রায় দেয় এবং আপিল করতে বলে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।