Beta
মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪

প্রশিক্ষণার্থী ২৫২ এসআইকে বাদ দেওয়ার নেপথ্যে কী

সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে পাসিং আউট প্যারেডে পুলিশ সদস্যরা। ফাইল ছবি
সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে পাসিং আউট প্যারেডে পুলিশ সদস্যরা। ফাইল ছবি
Picture of সাজ্জাদ হোসেন

সাজ্জাদ হোসেন

[publishpress_authors_box]

রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করার পর তা নিয়ে চলছিল আলোচনা। তার একদিনের মাথায় প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যহতি দেওয়ার খবরে শুরু হয়ে নতুন আলোচনা।

পুলিশে চাকরির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত আড়াইশ জনকে একসঙ্গে বাদ দেওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ভঙ্গকে কারণ দেখালেও তা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ আমলে নির্বাচিত এই পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ না দেওয়ার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেছিল বিএনপি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জনরোষে পড়ে পুলিশ। ভেঙে পড়া সেই বাহিনী যখন সচল হওয়ার চেষ্টায়, তখনই নতুন করে সারদার ঘটনা ঘটল।

গত রবিবার ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর তা স্থগিত করে।

এরপর সোমবার ৪০তম ক্যাডেট এসআই-২০২৩ ব্যাচের প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।

কী কারণ দেখিয়ে কারা বাদ

৪০তম ক্যাডেট এসআই-২০২৩ ব্যাচে একসঙ্গে ৮২৩ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রশিক্ষণ শুরুর পর ধাপে ধাপে কয়েকজন বাদ পড়ে। সবশেষ ছিলেন ৮০৪ জন। সেখান থেকে ২৫২ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এখন। এরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ছিলেন।

সারদার একাডেমিতে প্রশিক্ষণার্থী পুলিশ সদস্যরা।

তাদের প্রত্যেককে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে সারদার পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদের স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ১ অক্টোবর সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ–২০২৩–এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এসময়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেনু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়।

“কিন্তু আপনি উক্ত সরবরাহকৃত নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। আপনি অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এছাড়া আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়ালখুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।”

এই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, “একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলা পরিপন্থী। আপনার এরূপ আচরণ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করেছে এবং অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করেছে মর্মে আপনার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে …. বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

“ওই অভিযোগের কারণে একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) তিন দিনের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন। আপনি নির্ধারিত তিন দিন সময়ের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করেন। আপনার দাখিলকৃত কৈফিয়তের জবাব পর্যালোচনান্তে সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। আপনার উপরোক্ত শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত সাব–ইন্সপেক্টর পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার শামিল।”

অন্য কী কারণ

সারদা পুলিশ একাডেমির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের আড়ালে এখানে ভিন্ন কারণ রয়েছে।

তিনি বলেন, “অব্যাহতি পাওয়ার আসল কারণ ভিন্ন। যারা রাজনৈতিক বিবেচনায় বা দলীয় সুপারিশে যারা চাকরি পেয়েছেন কিংবা নিয়োগের সময় আর্থিক লেনদেন জড়িত ছিলেন, তাদেরই বেছে বেছে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।”

অব্যাহতি পাওয়া কয়েকজন জানান, গত ২০ অক্টোবর সারদায় ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই অনুষ্ঠানের আগে গত ১৮ অক্টোবর ৪০তম ক্যাডেট এসআই-২০২৩ ব্যাচের উপপরিদর্শকদের একাংশকে চার দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। মূলত ছুটিতে পাঠানো প্রশিক্ষণার্থীদের বেশিরভাগকেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ আমলে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগের ব্যাপক অভিযোগ ছিল। পুলিশে নিয়োগ-পদায়নে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি গোপালগঞ্জ কিংবা বৃহত্তর ফরিদপুরের প্রার্থীরা সুবিধা পেত বলেও অভিযোগ। এই এসআইদের মধ্যেও ৪৯ জন গোপালগঞ্জের ছিলেন বলে খবর এসেছে।

বাদ পড়া একজন সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে কথায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার বাড়ি মাদারীপুরে। তিনি ছাত্রজীবনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগে যুক্ত ছিলেন।

তিনি বলেন, “শুধু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে মনে করি। অথচ দলীয় সুপারিশে নয়, মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ পেয়েছিলাম আমি। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হলো।”

তিনি আরও বলেন, “অব্যাহতি পাওয়া অনেকেরই কোনও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর কিংবা শরীয়তপুর জেলায় বাড়ি হওয়ায় বাদ পড়েছেন কেউ কেউ।”

গত ১৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশে নতুনদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
গত ১৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশে নতুনদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বিএনপি কী বলেছিল

শেখ হাসিনার সরকার পতনের ঠিক আগে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় থাকা ৮০৩ জন এসআই এবং ৬৭ জন এএসপির নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়ে গত ১৭ অক্টেবর সংবাদ সম্মেলন করেছিল বিএনপি।

সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, “আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার তার ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করতে, পুলিশ প্রশাসনে তাদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে বিদায় নেওয়ার পূর্বে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে মোট ৮০৩ জনকে নিয়োগ প্রদান করে। এর মধ্যে ২০০ জনের বাড়ি গোপালগঞ্জ এবং ৪০৩ জনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনকারীদের হত্যাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য।”

এএসপি পদের ৬৭ জনও ছাত্রলীগের ‘ক্যাডার’ ছিল দাবি করে সালাহউদ্দিন বলেন, “পুনরায় ফ্যাসিবাদের উত্থানরোধকল্পে অবিলম্বে এ সকল সাব-ইন্সপেক্টর ও এএসপিদের নিয়োগ বাতিল করা হোক।”

সচিবালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শৃঙ্খলা ভঙ্গ ছাড়া ‘অন্য কোনও কারণ নেই’

নানা প্রশ্ন উঠলেও ২৫২ এসআইকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন পুলিশ সদর সপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) ইনামুল হক সাগর।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অন্য কোনও কারণ নয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগেই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমান ভুঞাও সকাল সন্ধ্যার জিজ্ঞাসায় বলেন, “প্রশিক্ষণ মাঠে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণেই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এখানে রাজনৈতিক কোনও বিষয় নেই।”

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে সাংবাদিকরা এনিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তিনিও বলেন, “রাজনৈতিক পরিচয় নয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২৫২ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

ত্রুটি কি নিয়োগ প্রক্রিয়ায়

শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে একসঙ্গে ২৫২ জন প্রশিক্ষণরত এসআইকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সের বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুকের কাছে। তিনি সারদার বাংলাদেশ পুলিশ একডেমিতে প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক

অধ্যাাপক ফারুক বলেন, “একটি ব্যাচের এতজন সদস্য তো একসঙ্গে শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে জড়িত থাকতে পারে না। এটা গ্রহণযোগ্য কোনও কথা না।”

তাহলে কারণটি কী হতে পারে- প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিষয়টা হচ্ছে এদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল। ত্রুটি বলতে এদের কারও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সংযোগ ছিল, কারও অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল। সে কারণগুলোকে প্রাধান্য দিয়েই হয়ত তাদের রিক্রুমেন্ট থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টা জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না।”

“যারা এসব নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ছিল, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদেরও আইন এবং বিচারের আওতায় আনা উচিৎ বলে আমি মনে করি,” বলেন অধ্যাপক ফারুক।

এসআই নিয়োগের বোর্ডে প্রধান থাকেন একজন ডিআইজি। সেই বোর্ডে একজন অতিরিক্ত ডিআইজি, একজন এআইজি পদপর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাসহ যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকেন এই বোর্ডে।

৪০তম ক্যাডেট এসআই-২০২৩ ব্যাচের নিয়োগ বোর্ডে কারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন, সেই বিষয়ে জানতে চাইলে কোনও তথ্য দিতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা।

অধ্যাপক ফারুক বলেন, “এএসপিদের নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় পিএসসির অধীনে। আর এসআইদের নিয়োগের বিষয়টি দেখে পুলিশ সদর দপ্তর। যে কোনও পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে রিটেন, ভাইভা পরীক্ষাগুলো ছিল। তারপর ভেরিফিকেশনের ব্যাপার ছিল। এরপর ট্রেনিং শেষ করে তাদের পাসিং আউট হয়। এসব নিয়োগের প্রতিটি ধাপে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করতে হবে।”

পুরো বিষয়টির তদন্তের ‍ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু একটি স্টেটমেন্টের মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে বাদ দিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এতবড় ঘটনা স্টেটমেন্ট দিয়ে জাস্টিফায়েড হবে না, এজন্য সঠিক তদন্ত প্রয়োজন।  

“সঠিকভাবে বিষয়টি তদন্ত করে অন্যায়ে জড়িতদের চিহ্নিত ও তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে জনগণের সামনে সঠিক তথ্যটি তুলে ধরতে হবে। তাহলেই জনগণের কাছে এর বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে।”

অস্ত্র চালানোসহ সব ধরনের প্রশিক্ষণই দেওয়া হয়ে সারদার পুলিশ একাডেমিতে।

আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের কী ঝুঁকি

এই ২৫২ জনকে এক বছর প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর বাদ দেওয়ায় তাদের জন্য ব্যয় করা রাষ্ট্রের অর্থের পুরোটাই জলে গেল বলে মনে করেন অধ্যাপক উমর ফারুক। সেই সঙ্গে এরা যে ঝুঁকির কারণও হয়ে উঠতে পারেন, সেই সতর্কবার্তা দেন তিনি।

অধ্যাপক ফারুক বলেন, “দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণে এসব প্রশিক্ষণার্থীরা বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করেছেন। তারা এসএমজি, এলএমজি, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, পিস্তল, গ্রেনেডসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালানো শিখেছেন।

“এছাড়া তারা জানেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা স্থাপনার নিরাপত্তায় কীভাবে কাজ করে পুলিশ। কীভাবে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, সেসবও তাদের শেখানো হয়েছে। তাই এসব জ্ঞানার্জনের পর কেউ যদি বিপথে যান, তাহলে রাষ্ট্রের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দেখা দিতে পারেন।”

শেষ পর্যায়ে এসে চাকরি হারানোর ক্ষোভ থেকে কেউ কেউ অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

তার এই শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমান ভুঞা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আপাতত তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যদি পরবর্তীতে তারা কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত