সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের দিকে ইঙ্গিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কঠোর হবে সরকার।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পুরান ঢাকার হোসনি দালান ইমামবাড়ায় আশুরা পালনের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “কোটাপদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। কোটার বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। সুতরাং আদালত যে আদেশ দেবেন সেই আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং মেনে নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের একান্ত কর্তব্য।”
আন্দোলকারীদের আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আদালতের আদেশ মানতে আমরাও বাধ্য। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে পুলিশ কাজ করবে। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত কোনও ধরনের অপতৎপরতা কেউ চালালে সেটি শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে।”
এসময় আন্দোলনকারীদের স্লোগানের প্রসঙ্গ তুলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “যারা নিজেদের রাজাকার বলে, তাদের কপালে জাতীয় পতাকা বাধার অধিকার নেই।”
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এ মাসের শুরু থেকেই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে অবরোধ, অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এই আন্দোলন নিয়ে রবিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভ থেকে ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান ওঠে।
রাতের সে উত্তেজনার রেশ ধরে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা হয়। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও এই হামলায় জড়িত বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ।
হামলার সময় পুলিশের কোনও তৎপরতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। তবে সন্ধ্যার পর বিপুল সংখ্যক পুলিশ যায় ক্যাম্পাসে।
বুধবার আশুরা উপলক্ষে ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
তাজিয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ছুরি, চাকু বা কোনও ধরনের দাহ্য পদার্থ না নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।