দুটি দাবি পূরণ না হলেও হাসপাতালে স্বাভাবিক কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের পক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আবদুল আহাদ মঙ্গলবার এখবর দিয়েছেন।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আজ আমাদের অবস্থান কর্মসূচি ছিল। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে সেটা পুরোটা করতে পারিনি। আগামীকাল (বুধবার) থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থা পূনরায় আগের নিয়মে চলবে।”
অর্থাৎ জরুরি বিভাগের পাশাপাশি আউটডোর, ইনডোরসহ সব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সময়ের মতো চিকিৎস্ সেবা মিলবে।
চিকিৎসকরা যে চারটি দাবি তুলেছেন, তার মধ্যে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ গঠনের দাবি চিকিৎসকদের থাকবে বলেও জানিয়েছেন ডা. আহাদ।
হাসপাতালে হামলা ও চিকিৎসকদের মারধরের প্রতিবাদে রবিবার তিনিই সারাদেশে চিকিৎসক ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
পরে সেদিনই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান। তবে বহির্বিভাগে সেবা বন্ধই রেখেছিল চিকিৎসকরা।
রোগীদের কথা বিবেচনা করে কর্মবিরতির মধ্যেও তিন ঘণ্টা সরকারি হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়েছিল চিকিৎসকরা। তার একদিন পর পুরোদমে কাজে ফেরার ঘোষণা দিল।
গত শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেলে দুর্ঘটনায় আহত এক শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর নিউরো সার্জারি বিভাগে ভাংচুর এবং চিকিৎসকদের মারধর করে একদল ব্যক্তি। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই রকম ঘটনা ঘটে।
এর প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে কর্মবিরতি শুরু করে চিকিৎসকরা। চার দফা দাবি তুলে ধরে সারাদেশেও চিকিৎসক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় দুপুরে।
তাদের দাবিগুলো ছিল- অপরাধীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ঢাকা মেডিকেলসহ সারাদেশের হাসপাতালে সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্ত করতে হবে, তারা ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রসহ থাকবে; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর চিকিৎসকদের কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছিল।
এই পরিস্থিতিতে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যায় ডা. আহাদ বলেছিলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা হাসপাতালগুলোতে অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে।
“তাই আমরা আশঙ্কা করছি, অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য জেলা, উপজেলা হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে এ ধরনের আক্রমণ আবারও হতে পারে। যারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি, তাদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারী দুজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেলে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।