ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।
২০১০ সালের বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের এ বিধান বহাল রেখে এ সংক্রান্ত দুটি রিট আবেদন খারিজ করে বুধবার বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছে।
রায়ে হাই কোর্ট বলেছে, এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া এখন পর্যন্ত যারা ডাক্তার পদবি ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার থেকে কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রায়ের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। এই ব্যাপারে আমরা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করব।”
পৃথক দুই রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য বুধবার (১২ মার্চ )দিন রেখেছিল হাই কোর্ট।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন হয়।
ডিপ্লোমাধারী হিসেবে নিবন্ধিত ‘ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারী আইনটির বৈষম্যমূলক প্রয়োগের অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন আহ্বায়ক শামসুল হুদাসহ কয়েজজন ২০১৩ সালে একটি রিট করেন।
পরে গত বছর এ আইনের ২৯ ধারার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিশনের সভাপতি ও সেক্রেটারি আরেকটি রিট করেন।
প্রথম রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ১১ মার্চ হাই কোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়। দ্বিতীয় রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৫ নভেম্বর হাই কোর্ট রুল দেন।
রুলে আইনের ২৯ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। দুই রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন শুনানি করেন। প্রথম রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. সাইদুর রহমান।
বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন- ২০১০ এর ২৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন নিবন্ধন করা কোনও মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোনও নাম, পদবি, বিবরণ বা প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন না, যার ফলে তার কোনও অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে বলে কেউ মনে করতে পারে, যদি না তা কোনও স্বীকৃত মেডিকেল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা বা স্বীকৃত ডেন্টাল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা হয়ে থাকে। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতিত অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না।
আইনের ২৯ (২) ধারার বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি উপধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করলে তা হবে একটি অপরাধ এবং সেজন্য তিনি ৩ (তিন) বছর কারাদণ্ড বা ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রতিবার এর পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বর্ণিত দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে, দণ্ডনীয় হবেন।
