ডলার সঙ্কট কাটাতে সোনা, প্রসাধনী, প্রক্রিয়াজাত খাবার, সফট ড্রিংকস, চামড়াজাতসহ ১৪ ধরনের বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব পণ্য আমদানি করতে এখন থেকে শতভাগ নগদ মার্জিন রাখতে হবে। অর্থাৎ পণ্যের মূল্য আগাম ব্যাংকে জমা করে এই পণ্যগুলোর এলসি বা ঋণপত্র খুলতে হবে। এতদিন এই পণ্যগুলো আমদানিতে পুরো মূল্য জমা করার বাধ্যবাধকতা ছিল না।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। তারপর থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার লক্ষ্যে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিনের হার নির্ধারণ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়। এবার বিলাসজাতীয় পণ্য এবং অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত আমদানি বিকল্প পণ্যগুলোর আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হলো।
ডলারে দাম বেড়ে যাওয়া, রেমিটেন্স কম আসা আর রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনায় বেশ কিছুদিন থেকেই ডলার সঙ্কটে ভুগছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা, মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ, মামলা, গ্রেপ্তার ও প্রবাসীদের উৎকণ্ঠার প্রেক্ষাপটে জুলাই মাসে রেমিটেন্স কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ডলার নিয়ে চলমান সব সঙ্কট কাটানোর পরিকল্পনা করছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তার মধ্যেই এমন নির্দেশনা এল।
যেসব পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে সেগুলো হলো : মোটরকার, ইলেক্ট্রনিক্স হোম বা অফিস অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী, ফল ও ফুল, নন সেরিয়াল ফুড অর্থাৎ অ-শস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় বা টিনজাত (ক্যান) খাদ্য, চকলেট, বিস্কুট, জুস, কফি, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় এবং তামাক, তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্য।
