Beta
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

কে কেন রাগ করল আপনারাই দেখেন, সাংবাদিকদের ড. ইউনূস

আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

রাজনৈতিকভাবে কখনও কারও ক্ষতি করার চেষ্টা করেননি বলে দাবি করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার শ্রম আইনের মামলায় জামিনের পর এ দাবি করে ‘তারপরও কে কেন তার উপর রাগ’- তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান সাংবাদিকদের।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় এদিন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি নিয়ে তাদের জামিনের মেয়াদ ৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।

গত ১ জানুয়ারি এই মামলার রায়ে ড. ইউনূসসহ চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে শ্রম আইনের ৩০৩ ও ৩০৭ ধারায় ৬ মাসের কারাদণ্ডের সঙ্গে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার শর্তে তাদের জামিনও দেয় আদালত।

মামলার অপর তিন আসামি হলেন– গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

ঢাকার কাকরাইলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রাজনৈতিকভাবে আমি কারও ক্ষতি করার চেষ্টাও করিনি। এখন কে আমার উপর রাগ করল, কেন রাগ করল, কেন আমাকে কাজকর্ম থেকে বিচ্যুত করে দিতে হবে, আমাকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দিতে হবে, কী সেই রাগ– সেটা আপনারাই বিশ্লেষণ করুন।”

১৯৮৩ সালে সরকারি অধ‍্যাদেশে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব‍্যাংকের ব‍্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে ড. ইউনূসকে কেন্দ্রীয় ব‍্যাংক অপসারণ করে ২০১১ সালের মার্চে মাসে।

৮৩ বছর বয়সী ড. ইউনূস বলেন, “আমরা কোর্টে হাজিরা দিয়েই চলেছি। যে পরিস্থিতিতেই হোক, হাজিরা দিতে হয়, উপস্থিত থাকতে হয়, আমরা দিচ্ছি। কিন্তু যে বয়সে আমরা আছি, আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। একজন আগে হেঁটে আসতেন, এখন হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসেন।”

একটা ‘দুর্যোগের’ মধ্যে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “নিজেদের মতো করে কাজকর্ম করতে পারছি না। এই বয়সে এসে বাকি কাজ করে যাব– এমনটিই ইচ্ছা ছিল। কাজের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়ার একটা চেষ্টা ছিল, কিন্তু সেদিকে যেতে পারছি না। দুঃখ লাগে– আমাদের অসমাপ্ত কাজ না করার কারণে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।”

ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যে কাজ করি তাতে পৃথিবীর মানুষ আগ্রহী। তারা এটা নিয়ে জানতে চায়, তারা এটা গ্রহণ করে। আমরা তো বিরাট ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে নাই। আমরা শুধু মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছি। অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করি। এটা আমার কাছে ভালো লাগে। আমাদের এই কাজে অনেক মানুষ সাড়া দেয়। দুনিয়ার বহু ধনী ব্যবসায়ী সাড়া দেয়।”

‘প্যারিস অলিম্পিক ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে আমাদের কথার ভিত্তিতে’

তার আইডিয়ার ভিত্তিতে প্যারিস অলিম্পিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “ভালো লাগার একটা বিষয় হলো– বাংলাদেশ থেকে একটা আইডিয়া, একটা ধারণা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আগ্রহের সঙ্গে নিচ্ছে।

“কিছু কিছু জিনিস আমার কাছে অদ্ভুত লাগে– যেটা কখনও চিন্তা করিনি এমন একটা কাজের সঙ্গে যুক্ত হব। প্যারিস অলিম্পিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে আমাদের কথার ভিত্তিতে। আমি যা বলেছি, তারা এটা গ্রহণ করেছে। ১০০ বছর পর তাদের এই মহা আয়োজন। এটা আমার কাছে অনেক পাওনা। এতে দেশের তরুণরা উদ্বুদ্ধ যে, আমাদের ধারণা নিয়ে একটা মহা কর্মকাণ্ড হতে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “টোকিও অলিম্পিকেও আমাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে। এটা মহা সম্মান। এটা শুধুমাত্র আমার একার নয়, এটা আমার দেশেরও সম্মান।”

‘লোকেরা অপেক্ষায়, আমি ব্যস্ত হাজিরা নিয়ে’

আরেক প্রশ্নের জবাব ড. ইউনূস বলেন, “অবশ্যই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। লোকেরা আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষায় আছেন, অথচ আমি আদালতে হাজিরা নিয়ে ব্যস্ত আছি। এটা তারা দেখছে না?”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত