দেশের কোনও নাগরিক আইন ভাঙলে যেভাবে তার বিচার হয়, ঠিক সেভাবেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসেরও বিচার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ আত্মসাতের মামলায় বুধবার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে অভিযোগ গঠন হয়। এই অভিযোগ গঠনকে বর্তমান সরকার আমলে ‘ক্রমাগত হয়রানি’র ধারাবাহিকতা হিসাবে দেখছেন বলে সাংবাদিকদের জানান শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এটা হয়রানি। আমার বোধের মধ্যে আসছে না, কেন এই হয়রানি? প্রতি বছর নতুন নতুন কাহিনী রচনা হচ্ছে।”
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে শেষ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ‘একদলীয়’ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আর কোনও রাজনীতি অবশিষ্ট নেই। এখানে কেবল একটি দলই সক্রিয় এবং সবকিছু তাদেরই দখলে, তারাই সবকিছু করে, তাদের নিজের মতো নির্বাচন করে।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (ড. ইউনূস) যেসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন, এসব কথা অসত্য ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য অপমানজনক।
ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূসের মামলা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী জানান, তার (ড. ইউনূসের) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা করেছে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি জানান, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কিছু কর ফাঁকির মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি আপিল বিভাগ পর্যন্ত গিয়ে হেরে যাওয়ার পর কর (ট্যাক্স) দিয়েছেন।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে দায়ের হওয়া মামলা প্রসঙ্গে আনিসুল হক জানান, ড. ইউনূস শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করেছিলেন, সে কারণে শ্রম আইনে মামলা হয়েছে এবং একটি মামলায় আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। এখনও অনেক মামলা পেন্ডিং আছে।
ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আর কী কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে– জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আইন, উপাত্ত সুরক্ষা আইন, সাইবার নিরাপত্তা আইন, ইইউ নির্বাচন কমিশন থেকে বাংলাদেশে একটি টিম এসেছিল, সেই টিমের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কি চিন্তা-ভাবনা করছে, রোহিঙ্গা ইস্যু ও সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী আইন সম্পর্কেও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, “কবে নাগাদ সংশোধিত শ্রম আইন পাস করা হবে, সেটাও তারা জানতে চেয়েছিল। তাদের বলেছি– আন্তর্জাতিক শ্রম আদালতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে নালিশ করা হয়েছিল, সেই নালিশটার শেষ আমরা চাই।
“তাদের আরও বলেছি, শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। আমার মনে হয় বিষয়টা শেষ করে দেয়া উচিত। তাদের সাথে কথা হয়েছে, আগামী নভেম্বরে আইএলও-এর যে গভর্নিং বডির মিটিং হবে, সেখানে আমাদের সমর্থন করার।” বাসস।