বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পিএলসির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বলা হচ্ছে, সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকে পাশপাশি তিনটি ভবনে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের গণমাধ্যম দৈনিক কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর, নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেল, টি স্পোর্টস ও ক্যাপিটাল এফএম রেডিও কার্যালয় অবস্থিত।
হামলার বিষয়ে নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিবেদক তাইমুর হাসান শুভ বলেন, “দুপুরে আকস্মিকভাবে শতাধিক মানুষের একটি মিছিল আমাদের অফিসের সামনে আসে। তাদের হাতে ছিল হকিস্টিকসহ লাঠিসোঁটা। তারা স্লোগান দিতে দিতে জোরপূর্বক প্রধান ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে শুরু হয় ভাঙচুর। দুর্বৃত্তরা রেডিও ক্যাপিটালের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। সেখানে টেবিল, কম্পিউটার, এসি সবকিছুতে ভাঙচুর চালানো হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দুর্বৃত্তরা পরে বাইরে এসে মিডিয়া প্রাঙ্গণে রাখা গাড়িগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা অন্তত ৩০টি গাড়ি ভেঙে ফেলেছে। এ ছাড়া ভবনের কাচের দেওয়াল ও দরজা ভেঙে ফেলা হয়। এসময় গোটা মিডিয়া হাউজে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠের উপসম্পাদক হায়দার আলী বলেন, “একটি কুচক্রী মহল গণমাধ্যমের ওপর ন্যাক্কারজনক এই হামলা চালিয়েছে। তারা এভাবে কাপুরষের মতো হামলা চালিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “হামলাকারীদের দেখে কাউকেই শিক্ষার্থী মনে হয়নি। বরং গণমাধ্যমে হামলার খবর শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের এখানে এসে সমবেদনা জানিয়েছেন। তারা হামলাকারীদের বিচার দাবি করেছেন।”
এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হায়দার আলী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সিসিটিভি ফুটেজ ও ছবি দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
ডিআরইউর নিন্দা
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের অফিসে দুর্বৃত্তদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। সোমবার রাতে বিবৃতি দিয়ে ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে ডিআরইউ সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন বলেন, “ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন। এ ধরনের হামলা সাংবাদিক সমাজকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
“ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও লেখা বা প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিবাদ জানানোর প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে। এখানে পেশিশক্তি দেখানোর সুযোগ নেই। গণমাধ্যম কারও প্রতিপক্ষ নয়, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করাই গণমাধ্যমের কাজ।”
বিবৃতিতে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও শ্রমিক-কর্মচারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।