বিএনপির বর্জন উপজেলা নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলছে না- ক্ষমতাসীনরা এমনটা বলে এলেও নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এটাও ভোটের হার কমার কারণ হিসাবে দেখছেন।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ভোটের হার কম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “ধান কাটা ভোট কম পড়ার প্রধান কারণ, বিষয়টা এমন নয়। আপানারা কেন বিষয়টা ওইদিকে নিয়ে আমাদের খোঁচা দেন৷ তাৎক্ষণিক কারণ ছিল সকালে বৃষ্টি। অন্যান্য কারণের মধ্যে ধান কাটা ছিল। বড় দল অংশ নেয়নি, এসব কারণে ভোট কম পড়েছে।”
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণের দুদিন আগে রবিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে একথা বলেন তিনি। তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেন, বিএনপির বর্জনই ভোটের হার কম হওয়ার একমাত্র কারণ নয়।
“বিশেষ করে আরেক বড় কারণ হলো স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাররা চাকরিস্থল থেকেও আসতে চায় না,” বলেন তিনি।
গত ৮ মে অনুষ্ঠিত ১৩৯ উপজেলায় ভোটের হার ছিল ৩৬ দশমিক ২২ শতাংশ, যা গত এক যুগে সবচেয়ে কম। ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা ভোটে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় উপজেলা ভোটে ২০০৯ সালে ৬৭.৬৯ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছিল।
এবার প্রথম ধাপে ভোটের হার কম হওয়ার জন্য ইসি ধান কাটার মওসুম এবং বৈরী আবহাওয়াকে কারণ দেখিয়েছিল।
বিএনপিরে আহ্বানে মানুষ ভোট দিতে যায়নি বলে দলটির নেতারা দাবি করে আসছেন। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির আহ্বানে জনগণের সাড়া নেই।
সব দল ভোটে না এলে তার প্রভাব পড়েই মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, “এটা সারা পৃথিবীতেই এমন। ভারতেও সব দল অংশ নিলেও ৬০ শতাংশ ভোট পড়েনি।”
ভোট বর্জনকারী দলগুলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারদের নিষেধ করেছেন। এটা তারা বলতে পারেন। তবে জোর করে কাউকে ভোট দিতে যেতে বাধা দিতে পারবেন না৷”
দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে ১৫৬ উপজেলায় ভোট হবে। সেখানে তিন পদে ২২ জন বিনাভোটে নির্বাচিত হচ্ছেন।
সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে আশা প্রকাশ করে আলমগীর বলেন, “ছোটখাটো যে সব সমস্যা মাঠে আছে, সেগুলো যাতে না হয়, সেজন্য প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন প্রথম ধাপের নির্বাচনের চেয়েও সুষ্ঠু হবে।”
গোপালগঞ্জে ভোটের পর সহিংসতায় একজনের মৃত্যু থেকে ইসি শিক্ষা নিচ্ছে কি না- এই প্রশ্নে আলমগীর বলেন, “ভোটের কয়দিন পর ঘটনা ঘটেছে। তবে সেটা নির্বাচনের কারণে নাকি ব্যক্তিগত কারণে সেটাও দেখতে হবে। তদন্ত না হলে তো মূল কারষ বলা যায় না৷
“এছাড়া নির্বাচন না থাকলে এদেশে সহিংসতা হয় না, তা তো নয়। এখন পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবে।”