Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

কাঁচাবাজারে দাম কমাচ্ছে ঈদ

ঢাকার একটি কাঁচাবাজারে সবজির দর-দাম করছেন এক ক্রেতা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ঢাকার একটি কাঁচাবাজারে সবজির দর-দাম করছেন এক ক্রেতা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ঘনিয়ে আসছে ঈদ, ভিড় কমছে ঢাকার কাঁচাবাজারে। ক্রেতা কম থাকায় পচনশীল পণ্যের দাম নিম্নমুখী। আপাত স্বস্তিতে থাকলেও ক্রেতাদের অভিযোগ, মুনাফা যা করার বিক্রেতারা আগেই করে নিয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে তারাও গ্রামের বাড়ি যাবেন। তাই ঈদের ছুটির আগে দাম কমিয়ে মজুত পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করছেন।

এবার ঈদের পরপরই পহেলা বৈশাখ। সব মিলিয়ে ৫-৬ দিনের ছুটি পাবে দেশবাসী। ছুটি শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই গ্রামে ফিরতে শুরু করবে ঢাকাবাসী। তাছাড়া ছুটি শেষে স্কুল-কলেজ খুলবে ঈদের ১০-১২ দিন পর। ফলে ঈদের পর ঢাকার স্বাভাবিক চিত্র ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগবে।

ঈদের আগে ও পরের এই সময়ে বাজারে ক্রেতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঢাকার কাঁচাবাজারকেন্দ্রিক দোকানগুলোতে পেঁয়াজ, রসুন, আদা বা ডিমের মতো পচনশীল পণ্য অবিক্রিত থাকলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ কারণে কিছুটা দাম কমিয়ে এসব পণ্য বিক্রি করে দোকান খালি করতে চেষ্টা করছেন বিক্রিতারা।

আবার শুক্রবার ছুটির দিনে ঈদের পোশাক কেনাকাটা করতে বড় বড় বিপণিবিতানে ছিল ভিড়। তাই ১৮ রমজানের শুক্রবারে ঢাকার প্রধান প্রধান কাঁচাবাজারগুলোতে অন্যান্য শুক্রবারের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় কম ছিল। পণ্যের দামও ছিল কিছুটা স্থিতিশীল। কোনও কোনও পণ্যের দাম ছিল কিছুটা নিম্নমুখি।

বাজারে লেবু, টমেটো, শসার দাম দেখা যায় কমতির দিকে। যেখানে প্রথম রোজায় এক হালি লেবুর দাম ওঠে ১০০ টাকায়, এখন সেই একই জাতের লেবু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকা হালি। একই অবস্থা টমেটো, শসার ক্ষেত্রেও। কেনা যাচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা জানান, লাউ, পেঁপে, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, করলার মতো সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। প্রায় সব বাজারেই রোজার প্রথম দিকের চেয়ে সবজির দাম কিছুটা কম রয়েছে। মহাখালীর বউ বাজারে শশা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, শুক্রবারে অনেকেই মাংস খেতে পছন্দ করেন। একারণে তরি-তরকারির বিক্রি কমেছে। মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, কচু, পুঁইশাক, লাউশাক নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। অন্যান্য সময় যে ধরনের এক আঁটি লাউশাক ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হতো, সেই ধরনের লাউশাক ৩০ টাকা দরেও বিকোচ্ছে কম।

আলুর দাম সামান্য বেড়েছে। বর্তমানে আলু প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। তবে কিছুটা স্বস্তি এসেছে পেঁয়াজের বাজারে। কেনা যাচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে।

এই দিন ২৯০ টাকায় এক পাল্লা (৫ কেজি) দেশি পেঁয়াজ কিনেছেন রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা। দাম কিছুটা স্বস্তা হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করে এ ক্রেতা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বাজারে ছোট আকৃতির কয়েক ধরনের পেঁয়াজ আছে। এই পেঁয়াজগুলো কিছুটা শুকনো মনে হলো। এ কারণে ৫ কেজি একবারে কিনলাম।”

অথচ রোজার কয়েকদিন আগেও ৯০ টাকায় এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এরও কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছিল।

তবে মাংসের বাজারে উত্তাপ বাড়ছে। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। ঈদের আগে আরও দাম বাড়ে কি না এই শঙ্কা থেকে ক্রেতারা ৫-১০ কেজি করেও মাংস কিনছেন বলে জানান ঢাকার নর্দা মোড়ল কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা আব্দুল কাদের।

তিনি বলেন, “এবার আমরা ঢাকায় ঈদ করব। বাজারের দামের যে অস্থিরতা তাতে কখন কোনটার দাম বাড়ে ঠিক নাই। তাই এখনই মাংস কিনে ফ্রিজে রেখে দিচ্ছি। এর থেকে তো আর কমার কোনও লক্ষণ নেই। কিনে রাখলে লোকসান নাই।”

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ মাংসের দোকানে বয়স্ক গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। এসব মাংস দেখতে লাল রংয়ের। আঁশগুলোও বেশ মোটা। ক্রেতারা বলছেন, এ ধরনের মাংস খেতে স্বাদ কম হয়। তারপরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে এ ধরনের মাংস।

এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি কিনতে গুনতে হচ্ছে কেজি প্রতি ২৩০ টাকা। সোনালী মুরগি ৩৩০ টাকা কেজি।

একই বাজারের ডিম বিক্রেতা আবু বক্কর বলেন, “আর বড়জোর এক সপ্তাহ বেচাকেনা হবে। ২৫ রোজার পর বাড়ি চলে যাব। একারণে ডিমের দাম একটু কমিয়ে দিয়েছি। বৃহস্পতিবার বিক্রি করেছি ১৩৫ টাকা ডজন। শুক্রবার থেকে দাম কমিয়ে ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি করছি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত